পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশের (পিএসসি) ১৯তম বোর্ড সভা বুধবার (১০ মে) দুপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর মিরপুরে পিএসসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশের রেক্টর (অতিরিক্ত আইজিপি) ও বোর্ড সচিব ড. মল্লিক ফখরুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম সভা পরিচালনা করেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান (পিএএ), আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান (বিএসপি, এসজিপি, এনডিসি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি), বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের রেক্টর (সচিব) মো. আশরাফ উদ্দিন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নুরুল আলম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রশাসন ও বিধি অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব সেলিনা পারভেজ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ক্যারিয়ার প্ল্যানিং ও প্রশিক্ষণ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. মো. সহিদউল্যাহ, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও সমন্বয়) মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. বেলায়েত হোসেন তালুকদার প্রমুখ।
বোর্ড সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ পুলিশ যে ভূমিকা রেখেছে, তা দেশে-বিদেশে অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে।
তিনি বলেন, পুলিশ জনগণের আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আমরা পুলিশ স্টাফ কলেজকে আরও আধুনিক করতে চাই, যুগোপযোগী করতে চাই।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অপরাধের ধরন প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে। এ জন্য পুলিশ সদস্যদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্টাফ কলেজের বিকল্প নেই। এ জন্য স্টাফ কলেজকে সমৃদ্ধ করতে হবে, আরও যুগোপযোগী করতে হবে।
পুলিশ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্টাফ কলেজ একটি অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করবে বলে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেন, জনগণের সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করা এবং তাদেরকে দ্রুততম সময়ে সেবা দেওয়ার জন্য পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ জন্য পুলিশ স্টাফ কলেজকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ পুলিশের অনেক সাফল্য রয়েছে।
আইজিপি বলেন, পুলিশ স্টাফ কলেজ শুধু পুলিশ বাহিনীর প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেই নয়, জাতীয় প্রেক্ষিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আগামী দিনেও পুলিশ স্টাফ কলেজ এ ভূমিকা অব্যাহত রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান পিএসসির বিভিন্ন প্রস্তাবনা ও উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে মিডিয়া ব্যবস্থাপনা, নেতৃত্ব ও দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
পিএসসির রেক্টর মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, পিএসসি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বাড়াতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে। পুলিশ স্টাফ কলেজের অগ্রযাত্রায় সার্বিক সমর্থন এবং সহযোগিতা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।
১৯তম বোর্ড সভায় রূপকল্প ২০৪১-এর অভীষ্ঠ লক্ষ্য অর্জনে স্মার্ট পুলিশের উপযোগী প্রশিক্ষণ, শিক্ষা ও গবেষণা কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, ‘বঙ্গবন্ধুস ভিশন অব ল এনফোর্সমেন্ট : পুলিশিং ইন বাংলাদেশ’ গবেষণা সংক্রান্ত সেমিনার ও প্রকাশনা উদ্বোধন, প্রশিক্ষণ, একাডেমিক ও গবেষণা কার্যক্রমে বৈদেশিক সহযোগিতার আওতা সম্প্রসারণ, বঙ্গবন্ধু সেন্টার ফর পুলিশ রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রতিষ্ঠা, পিএসসির জনবল বৃদ্ধিকরণ ও অবকাঠামো উন্নয়ন, ইন্টারপাভুক্ত সদস্যদের আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এ ছাড়া গত ১৮তম বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতিও পর্যালোচনা করা হয়।
এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিএসসিতে সদ্য প্রতিষ্ঠিত মুজিব কর্নার উদ্বোধন করেন। তিনি মুজিব কর্নারের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। বোর্ড সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পিএসসি চত্বরে একটি গাছের চারা রোপণ করেন।
