বাংলাদেশের প্রথম পতাকার অন্যতম নকশাকার শিব নারায়ণ দাশ মারা গেছেন।

৭৮ বছর বয়সী জাসদ নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাশ শুক্রবার সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে মারা যান বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে অর্ণব আদিত্য দাশ। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

জাসদের দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন জানান, শনিবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিব নারায়ণ দাসের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, শিব নারায়ণ দাশ তাঁর চোখ সন্ধানীতে দান করেছেন, আর পরিবার তাঁর শরীর দান করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সাজ্জাদ হোসেন বলেন, “আজ (মরদেহ) বারডেমের মরচুয়ারিতে রাখা হবে। শনিবার সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান শেষে জাতির পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বেলা ১২টায় মরদেহ কুমিল্লা নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিকেলে তাঁর মরদেহ ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হবে।”

শ্বাসকষ্ট নিয়ে ১ এপ্রিল রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন শিব নারায়ণ দাশ।

মণিপুরীপাড়ার বাসায় ওই দিন রাতে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আইসিইউতে রাখা হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে শমরিতা থেকে তাঁকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে নেওয়া হয়েছিল।

শিব নারায়ণের তৈরি করা বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা ধরেই হয়েছিল স্বাধীনতার সংগ্রাম। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের সামনে প্রথম বাংলাদেশের পতাকা ওড়ানো হয়েছিল।

লাল-সবুজের ভেতরে হলুদ রঙে বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত ওই পতাকার নকশা যাঁরা করেছিলেন, তাঁদের একজন সে সময়ের ছাত্রলীগ নেতা শিব নারায়ণ দাশ।

১৯৭০ সালের ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হলের (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ১১৮ নম্বর কক্ষে বসে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মী ওই পতাকার নকশা তৈরি করেছিলেন ‘জয় বাংলা বাহিনীর’ জন্য।

স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে সরকার শিল্পী কামরুল হাসানকে পতাকার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দিতে বলে। কামরুল হাসান মানচিত্র-সংবলিত ওই লাল-সবুজ পতাকা থেকে মানচিত্র বাদ দিয়ে যে পতাকার নকশা করেন, সেটিই এখন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা।

শিব নারায়ণ দাশের মৃত্যুতে গভীর শোক ও তাঁর পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।