পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার ৪ আসামি। ছবি: বাংলাদেশ পুলি

নেত্রকোনার মদন থানা-পুলিশ অভিযান চালিয়ে সম্প্রতি সংঘটিত দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনায় ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। সেই সঙ্গে লুট হওয়া জিনিসপত্র উদ্ধার করেছে।

জানা গেছে, নেত্রকোনার মদন উপজেলার বাসিন্দা মো. মোবাশ্বের হোসেন (২৭) দশ মাস আগে পাবনা জেলার বেড়া উপজেলাধীন নতুন বেরাঙ্গা গ্রামে রেজি. কাবিনমূলে জনৈক দুলাল চৌধুরীর মেয়ে মেহেরুননেছাকে বিয়ে করেন। তিনি তাঁর আত্মীয়স্বজনসহ কনে উঠিয়ে আনার জন্য ১৫ এপ্রিল ২টি মাইক্রোবাসে করে বরযাত্রী নিয়ে রাত আনুমানিক ৩টায় পাবনার উদ্দেশে রওনা করেন। রাত সাড়ে ৩টার দিকে মদন থানাধীন বাররী এলাকার ফ্রয়হালা ২ নং ব্রিজে তাঁদের প্রথম মাইক্রোবাসটি আনুমানিক ১০ হাত উত্তরে পাকা রাস্তার ওপর পৌঁছানোমাত্রই অজ্ঞাতনামা ৪ জন দস্যু পূর্বপরিকল্পিতভাবে ব্রিজের উভয় পাশের পিলারের সাথে মাছ ধরার জাল বেঁধে রাখে এবং রাস্তার মাঝে একটি হ্যান্ডট্রলি দাকড় করিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড দেয়। তারপর মাইক্রোবাসটির গতিরোধ করে শক্ত লাঠি, চোখা ধারালো কাঠের ছুরি ও কাঠের হাতল যুক্ত দা দিয়ে মাইক্রোবাসের ডান পাশের গ্লাসে আঘাত করে ভেঙে ফেলে। এরপর মাইক্রোবাসের বাম পাশের গ্লাস খুলে হাত দিয়ে দরজা খুলে দেশীয় অস্ত্রের মাধ্যমে মো. মোবাশ্বের হোসেন ও তাঁর আত্মীয়স্বজনকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ৩টি স্মার্ট ফোন, ১টি বাটন ফোন, স্বর্ণের বিভিন্ন গহনা (অনুমান ৭ ভরি) এবং নগদ ৬৩ হাজার টাকা নিয়ে যায়।

এ ঘটনার আগে একই দিন রাত ১১টায় ডাকাতেরা কেন্দুয়া থানাধীন পাচহার গ্রামে কাচাঁ রাস্তার ওপর একটি মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে ২ জন আরোহী সানোয়ার ও সেকুলের কাছ থেকে লাঠি, দায়ের ভয় দেখিয়ে ও মারধর করে ১টি স্মার্টফোন ও ৩ হাজার ৩০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়। অল্প সময়ের ব্যবধানে আরেকটি মোটরসাইকেল কেন্দুয়া থেকে পাচহার নামক স্থানে আসার সময় দস্যুরা সেটির গতিরোধ করে চালকের কাছ থেকে ৮০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়।

পরে মদন থানার পুলিশের একটি চৌকস দল নেত্রকোনা ডিবি পুলিশের এলআইসি টিমের সহায়তায় অভিযান পরিচালনা করে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ১৬ এপ্রিল রাত আনুমানিক ৯টায় কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানা এলাকা থেকে জাকির হোসেনকে (২৪) গ্রেপ্তার করে এবং তাঁর কাছ থেকে লুষ্ঠিত একটি স্মার্টফোন ও নগদ ৩ হাজার টাকা উদ্ধার করে। জাকির হোসেনের দেওয়া তথ্যমতে এবং তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মদন থানার পুলিশ ১৭ এপ্রিল বিকেল অনুমান সাড়ে ৫টায় ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানাধীন শনির আখড়া ব্রিজের ওপর থেকে আসামি মো. আরিফ হোসেনকে (২৯) গ্রেপ্তার করে। তাঁদের দেওয়া তথ্যমতে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে অপর আসামি মো. শাহীন আলম (৩৫) ও মো. বাবুন মিয়াকে (২৪) গ্রেপ্তার করে এবং তাঁদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত দুটি স্মার্টফোন উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার ৪ জন আসামিকে নিয়ে লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের জন্য নেত্রকোনায় পৌঁছে ১৮ এপ্রিল বেলা আড়াইটায় আসামি মো. বাবুন মিয়ার দেয়া তথ্যমতে আটপাড়া থানাধীন তেলিগাতী বাজার থেকে রোপন দেবনাথের জুয়েলারী দোকান হতে লুণ্ঠিত স্বর্ণ (যার পরিমাণ- ০২ আনা ০২ রতি) উদ্ধার করে এবং সকল আসামির দেখানো মতে ফ্রয়হালা ২ নং ব্রিজের পাশে পাচহার গ্রামের নুরু মিয়ার ধানখেত হতে দস্যুতার ঘটনায় ব্যবহৃত ২টি টর্চলাইট, ১টি কাঠের আছারীযুক্ত দা এবং দস্যুতাকালে আসামিদের ব্যবহৃত পোশাক, মুখ বাঁধার গামছা উদ্ধার করা হয়।

তাঁদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।