কখনো শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, কখনো ব্যাংক কর্মকর্তা, কখনোবা জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালকের পরিচয় দিত তারা। ব্যাংকে নিয়োগ, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোসহ বিভিন্ন চাকরি দেওয়ার কথা বলে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। অবশেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের হাতে ধরা পড়েছে এই প্রতারক চক্রের ৮ সদস্য। খবর ডিএমপি নিউজের।

গ্রেপ্তার আসামিদের নাম মো. এনায়েত খান, মো. কাওসার আলী, কাজী হাবীব, সেলিম আহামদ, ফয়েজ উল্লাহ, জালাল উদ্দিন তালুকদার, মো. সাগর ও মো. সুলতান মাহমুদ।

রাজধানীর মতিঝিল, মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানা এলাকায় ৯ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র, ৮টি মোবাইল ফোন ও ১টি কম্পিউটার জব্দ করা হয়েছে।

গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলাম পিপিএম (সেবা) জানান, ভুক্তভোগী মো. শওকত আলী ৭ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় এনায়েত খান, মো, কাওসার আলী ও কাজী হাবিবসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। তিনি জানান, এনায়েত খানের সাথে একই ভবনে বসবাস করার প্রেক্ষিতে শওকত আলীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এনায়েত খান শওকত আলীর ছেলে ও তার ভায়রার ছেলেকে সাউথইস্ট ব্যাংকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে সেখানে গিয়ে ভাইভা পরীক্ষা দিতে বলে। এনায়েত খানের কথামতো গত ১৭ আগস্ট বেলা ১১টায় শওকত আলীর ছেলে ও তার ভায়রার ছেলে মতিঝিলে সাউথইস্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে গেলে কাজী হাবিব নিজেকে সাউথইস্ট ব্যাংকের পিয়ন পরিচয় দিয়ে ব্যাংকের ভিতরে নিয়ে যায় এবং মো. কাওসার আলীকে সাউথইস্ট ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। কাওসার ব্যাংকের অজ্ঞাতনামা কর্মকর্তার সঙ্গে ওই দুজনকে পরিচয় করিয়ে একসাথে বসে প্রায় ঘন্টাখানেক ভাইভা নিয়ে তাদের বিদায় করে দেয়। কিছুদিন পর এনায়েত খান, শওকত আলীকে জানান, তার ছেলে ও তার ভায়রার ছেলের নামে সাউথইস্ট ব্যাংকের দুটি যোগদানপত্র পেতে গেলে ব্যাংকে ডোনেশন বাবদ ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। শওকত ১ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে নগদ ৯ লাখ টাকা এনায়েতের হাতে তুলে দেন। এরপর শুরু হয় এনায়েতের টালবাহানা। অবশেষে ৭ সেপ্টেম্বর মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন শওকত। মামলার তদন্তভার পড়ে ডিবির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ওপর। এর পরপরই তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ওই আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়।