মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্টারপা সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। ছবি: ভিডিও থেকে ধারণকৃত

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ পুলিশ সফলভাবে সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা মোকাবিলা করে যাচ্ছে।

ঢাকায় পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশের আয়োজনে ১২ সেপ্টেম্বর (সোমবার) শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব পুলিশ একাডেমিসের (ইন্টারপা) ১১তম বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সম্মেলনে যুক্ত হন। ইন্টারপা হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুলিশ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক সংগঠন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘ডিজিটালাইজেশন অব পুলিশিং’।

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। ছবি: ভিডিও থেকে ধারণকৃত

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার), ইন্টারপার চেয়ারপারসন তুরস্কের পুলিশ একাডেমির রেক্টর অধ্যাপক ড. ইলমাজ চোলাক, পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশের রেক্টর অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার গোলাম ফারুক বিপিএম (বার), পিপিএম।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের শুরুতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর পরিবারের সদস্য, বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করতে গিয়ে শহীদ হওয়া সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর সদস্য, মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বপ্রথম অস্ত্র হাতে তুলে নেওয়া পুলিশ বাহিনীর সদস্য এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ ইন্টারপা সম্মেলন আয়োজন করায় আমি আনন্দিত।’ তিনি বলেন, পুলিশের ডিজিটালাইজেশন সময়ের দাবি। বিশ্বায়নের এই যুগে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অপরাধ দমনে ডিজিটালাইজেশনের বিকল্প নেই। সন্ত্রাসীদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের প্রভাব বিশ্বজুড়েই পড়ে। সাইবার অপরাধ, অর্থ পাচারসহ অন্যান্য অপরাধ বাড়ছে। পুলিশের কাজ এখন আরও বেশি চ্যালেঞ্জিং। কাজেই দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে এসব অপরাধ মোকাবিলার কোনো বিকল্প নেই। এ ক্ষেত্রে ইন্টারপা সম্মেলন সহযোগিতা, অভিজ্ঞতা বিনিময়সহ নানা কিছুর নতুন দ্বার খুলে দেবে।

মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। স্বাধীনতাযুদ্ধে তারাই প্রথম অস্ত্র হাতে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। স্বাধীনতার পর পুলিশ পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, পেশাদারত্বের সঙ্গে পুলিশের দায়িত্ব পালন নিশ্চিত করার পাশাপাশি ইন্টারপা মানবকল্যাণেও কাজ করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, অপরাধের এখন আর কোনো সীমা নেই। কাজেই সাইবার অপরাধ দমনে ডিজিটালাইজেশনের কোনো বিকল্প নেই। আমরা জানি, বুদ্ধিবৃত্তিক অনুশীলন এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি উপায় হতে পারে।’

আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। ছবি: ভিডিও থেকে ধারণকৃত

আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেন, ‘আমরা জানি, বিশ্ব খুব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। প্রযুক্তির উৎকর্ষ ঘটছে। শিল্পবিপ্লব ঘটছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ নানা কিছু মানবসভ্যতাকে প্রভাবিত করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ নামে একটি দূরদর্শী লক্ষ্য নির্ধারণ করে। বাংলাদেশ পুলিশ ডিজিটাল রূপান্তরে এখন অগ্রপথিক। নানা ধরনের পুলিশের সেবা অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের সক্ষমতা বিৃদ্ধি, পুলিশের কাজকে ডিজিটালাইজেশন করাসহ নানা পদক্ষেপ নিলে বদলে যাওয়া বিশ্বে অপরাধ দমন সম্ভব। বৈশ্বিক অংশীদার হিসেবে আমরা প্রশিক্ষণসহ নানা বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে থাকি। ইন্টারপা সম্মেলন অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর পুলিশ বাহিনীর সক্ষমতা বাড়াবে।’

১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে এবারের ইন্টারপা সম্মেলন। সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪৪টি দেশের ১২৭ জন প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। সম্মেলনে বাংলাদেশ এবং বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা ১৩টি পেপার উপস্থাপন করবেন। ৫৯টি দেশের ৭৬টি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সংগঠন ইন্টারপা এ সম্মেলনের মাধ্যমে আগামী তিন বছরের কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণ করবে।