কুমিল্লায় মাল্টা চাষ করছেন তিন শতাধিক চাষি। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে গ্রামে সবুজ মাল্টা। জেলার তিন শতাধিক চাষি এ ফলটির চাষে যুক্ত। মাল্টা বিক্রি করে নগদ টাকা পেয়ে খুশি তারা। অন্যদিকে ভোক্তারা ফরমালিনমুক্ত তাজা মাল্টা কিনতে পেরে আনন্দিত।

কুমিল্লা আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ, বরুড়া, লালমাই, নাঙ্গলকোট, দেবীদ্বারসহ কয়েকটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মাল্টার চাষ করা হচ্ছে। খবর বাসসের।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় ৩০ একর জমিতে মাল্টার চাষ হচ্ছে। এ ছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে ১০ থেকে ১৫টি করে চারা লাগাচ্ছেন কেউ কেউ। উৎপাদিত এসব মাল্টা কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় ফল দোকানসহ বিভিন্ন উপজেলার দোকানে বিক্রি হচ্ছে।
বরুড়া পৌর এলাকার উত্তরের গ্রাম মুগুজির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আবদুর রব মাল্টার বাগান করে বেশ সাফল্য পেয়েছেন।

তিনি জানান, দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। দেশে এসে স্থানীয় বাজারে ক্ষুদ্র ব্যবসা শুরু করেন। বাড়ির পাশে নিজের কিছু জমি ছিল। পরিকল্পনা করলেন অর্থকরী কোনো ফলের বাগান করবেন। ইউটিউবে মাল্টার চাষ ও সম্ভাবনা দেখলেন।

আবদুর রব জানান, তিনি তিন বছর আগে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তারিক মাহমুদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর সহযোগিতা নিয়ে ১৭ শতক জমিতে মাল্টা চাষ করেন। তাঁর ভালো ফল দেওয়া গাছ থেকে মৌসুমে প্রতিটি থেকে ৩৫ কেজির মতো মাল্টা পেয়েছেন। এই মাল্টা আকারে বড়, মিষ্টিও।

তিনি বাজারের পাইকারের কাছে মাল্টা বিক্রি করেন না। গ্রামের মানুষের কাছে কম দামে বিক্রি করেন, যাতে এই ফল সবাই কিনতে পারে।

জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা তারিক মাহমুদুল ইসলাম বাসসকে বলেন, দেশের শতভাগ মাল্টা আমদানি করতে হয়। এ দেশে ভারত, চীন থেকে বেশি মাল্টা আসে, যার অধিকাংশ ক্ষতিকর কেমিক্যাল যুক্ত।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত মাল্টা এখন বাজারে পাওয়া যায়, যা দেশের পাঁচ ভাগ চাহিদা পূরণ করছে। এই গতি অব্যাহত থাকলে আগামী পাঁচ বছর পর নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে মাল্টা রপ্তানি করা যাবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘মাল্টার চাষ করতে অনেকে আগ্রহী। তারা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসে যোগাযোগ করছেন।’

তিনি বলেন, ‘কুমিল্লায় প্রচুর মাল্টা চাষের সম্ভাবনা রয়েছে। মাল্টার বাগান করতে আগ্রহীদের আমরা পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছি।’