ইসরায়েলি হামলায় এক নিহতের স্বজনদের আহাজারি। ছবি: সংগৃহীত

অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে প্রায় সাত মাস ধরে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক মহলের হুঁশিয়ারির পরও গাজার দক্ষিণাঞ্চলের শহর রাফাহে অভিযান চালাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ দেশটি। গত শুক্রবারও ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ছয়জন শিশু বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গাজার সিভিল ডিফেন্সের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, গতকাল শনিবার রাফাহর পশ্চিমাঞ্চলীয় তাল আস-সুলতান এলাকায় ভয়াবহ হামলায় নিহতদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আল-নাজ্জার হাসপাতালের মর্গে সাদা কাফনে ঢাকা শিশুদের লাশ জড়িয়ে ধরে স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা যায়।

নিহতদের মধ্যে আবদেল–ফাত্তাহ সোভি রাদওয়ান, তাঁর স্ত্রী নাজলা আহমেদ আওয়েদাহ এবং তাঁদের তিন সন্তান রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর শ্যালক আহমেদ বারহুম। এই হামলায় বারহুম তাঁর স্ত্রী রাওয়ান রাদওয়ান এবং তাদের পাঁচ বছরের মেয়ে আলাকে হারিয়েছেন।

শিশু আলার মৃতদেহ কোলে নিয়ে কান্নারত বারহুম বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেন, ‘এই পৃথিবী মানবিক মূল্যবোধ ও নৈতিকতাহীন হয়ে পড়েছে। তারা বাস্তুচ্যুত নারী ও শিশুদের আশ্রয় নেওয়া বাড়িতে বোমা হামলা চালায়।’

আল জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, আল-নাজ্জার হাসপাতাল থেকে মৃতদেহ শেষ দাফন পর্যন্ত স্থানান্তরের দৃশ্য ছিল হৃদয়বিদারক। ‘রক্তে ভেজা সাদা চাদরে মোড়া অধিকাংশই ছিল শিশু…’। হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেছেন, রক্তস্নাত শিশুদের গায়ে গভীর ক্ষত ছিল।

হানি মাহমুদ আরও বলেন, ‘তাদের শরীর এমনভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে জীবিত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলেও তাদের বাঁচানো সম্ভব হতো না। বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই এমন আঘাতের চিকিৎসা সম্ভব নয়।’

আল জাজিরার সংবাদদাতারা জানিয়েছেন, গতকাল শনিবারও ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শহরটিতে হামলা অব্যাহত রেখেছে।