যশোর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে পুলিশের সংবাদ সম্মেলন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

যশোরে চাঞ্চল্যকর বদিউজ্জামান ওরফে ধনি হত্যা মামলার ২ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করেছে হত্যার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন অস্ত্র।

আজ বৃহস্পতিবার যশোর পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ১২ জুলাই বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে কোতোয়ালি মডেল থানার শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ে স্থানীয় ইয়াসিন আরাফাত হুজুর হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলার আসামি শংকরপুর চোপদারপাড়া এলাকার মৃত আ. লতিফের ছেলে বদিউজ্জামান ওরফে ধনিকে (৫০) প্রতিপক্ষ শামীম আহম্মেদ মানুয়ার (নিহত ইয়াসিন আরাফাতের শ্বশুর) নির্দেশে তাঁর ভাগনে রায়হানের নেতৃত্বে ৭/৮ জন দুর্বৃত্ত কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তাঁকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় নিহত বদিউজ্জামানের ভাই মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে এজাহার দিলে কোতোয়ালি মডেল থানা মামলা হিসেবে গ্রহণ করে।

ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় জেলা পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার বিপিএম (বার), পিপিএম কোতোয়ালি থানা ও ডিবি পুলিশকে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটনের জন্য কঠোর নির্দেশ দেন।

এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই আনছারুল হকের নেতৃত্বে কোতোয়ালি থানা ও জেলা গোয়েন্দা শাখা যৌথভাবে গতকাল বুধবার গভীর রাতে যশোর কোতোয়ালি থানাধীন টিবি ক্লিনিক পাড়া ও খুলনার দিঘলিয়া বারাকপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি রায়হান ও এজাহারনামীয় ৭ নম্বর আসামি ইছামীরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের স্বীকারোক্তি মতে শংকরপুর চোপদারপাড়া আকবরের মোড়ের ভাঙ্গারী পট্টি মসজিদের পুকুর থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত ২টি গাছি দা, ১টি চায়নিজ কুড়াল, ১টি বার্মিজ চাকু উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নিহত বদিউজ্জামান ওরফে ধনি, যশোর জেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি ছিলেন। একই এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি পদপ্রার্থী আসামি শামীম আহম্মেদ মানুয়ার সঙ্গে ধনির দীর্ঘদিনের দলীয় কোন্দল এবং মানুয়ার জামাতা ইয়াসিন আরাফাতের হত্যাকে কেন্দ্র করে এবং সর্বোপরি এলাকায় বিএনপির আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে বদিউজ্জামান ওরফে ধনিকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা যায়।

নিহত বদিউজ্জামান ধনি ও আসামিদের পিসি/পিআর যাচাই করে দেখা যায় , নিহত ধনির বিরুদ্ধে ২টি হত্যা মামলা, ১টি অস্ত্র মামলা, ১টি সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলা, ১টি বিস্ফোরক মামলাসহ মোট ১২টি মামলা বিচারাধীন আছে।

এ ছাড়া গ্রেপ্তার আসামি রায়হানের বিরুদ্ধে ১টি অস্ত্র মামলা, ১টি মাদক মামলা, ২টি চাঁদাবাজি মামলাসহ ৪টি মামলা বিচারাধীন আছে।