সংবাদ সম্মেলনে এজেন্ট ব্যাংকের ছিনতাইয়ের ঘটনার বিবরণ দিচ্ছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহিদুল ইসলাম।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী পৌরসভা এলাকা থেকে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকের এক কর্মীর কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় পুলিশ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

এ সময় ছিনতাইকারীদের কাছ থেকে নগদ ৪ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার ও ৩টি মোটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত ছিনতাইকারীরা হলেন, উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর করিমপুর এলাকার মো.আবুল কাশেমের ছেলে যুবায়েদ হোসেন বিপ্লব (২৮) চৌমুহনী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পৌর হাজিপুর গ্রামের বেলাল হোসেনের ছেলে পারভেজ (৩০) ১১নং দুর্গাপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গাপুর গ্রামের মৃত অজি উল্যার ছেলে আমিরুল ইসলাম সুজন (২৯) গনিপুর এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে মো.সাহাব উদ্দিন (৩৭)।

বৃহস্পতিবার (১৪ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহিদুল ইসলাম তার কার্যালয়ের হলরুমে আয়োজিত এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে গতকাল বুধবার ৩ ছিনতাইকারীকে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও বেগমগঞ্জ থানার পুলিশ।

এসপি জানান, ওই ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িত ছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছেন।

এসপি আরও জানান ,ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী দুই ভাই ইয়াছিন আরাফাত রহিম (৩২) ও মহিউদ্দিন সোহাগ (৩৮)।

পুলিশের অভিযান টের পেয়ে তারা পালিয়ে যান। তবে তাদের বসত ঘর থেকে ৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বাকি আসামিদের কাছ থেকে ৩৫ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়। আটককৃতরা জানায়,সুজন ২ লক্ষ টাকা,বিপ্লব ১ লক্ষ টাকা ও পারভেজ ১ লক্ষ টাকা ভাগে পান।বাকি টাকা সোহাগ নিজের কাছে রেখে দেন। ঘটনার দিন ঘটনাস্থলের আশপাশে থেকে সোহাগ টাকা বহনকারীর গতিবিধি সুজনকে জানান এবং রহিম রাস্তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে পালাতে সহায়তা করেন। ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল রহিমের। তা সুজনের বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়।

উল্লেখ্য, সুজন নিজেকে দুর্গাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন । রহিম পৌর ছাত্রলীগের কথিত নেতা হিসেবে সর্বত্র নিজেকে পরিচয় দেন। অপর পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান পুলিশের এ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্ত।

উল্লেখ্য, গত মাসের ২০ জুন দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আটিয়াবাড়ির পোল সংলগ্ন এলাকায় এ টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মাস্টার এজেন্ট পয়েন্ট থাকে।এ এজেন্ট পয়েন্ট থেকে অন্যান্য সাধারণ এজেন্ট পয়েন্টগুলোতে টাকা সরবরাহ করা হয়।

প্রতিদিনের মতো গত ২০ জুন সকালের দিকে চৌমুহনী ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাস্টার পয়েন্ট থেকে তাঁদের কর্মী মোজাম্মেল হক ওরফে জামসেদ ১৯ লাখ টাকা তোলেন।

ওই টাকা তিনি বিভিন্ন পয়েন্টে থাকা এজেন্টদের কাছে বিতরণের জন্য মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। মোজাম্মেল হক দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মোটরসাইকেলে করে আটিয়াবাড়ি পোল সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে তিন যুবক আরেকটি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে তাঁর গতিরোধ করেন।

এ সময় তারা মোজাম্মেলের কাছ থেকে ১৯ লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান। পরে এ ঘটনায় গত ২১ জুন চৌমুহনী ডাচ্ বাংলা এজেন্ট ব্যাংকের মাস্টার এজেন্ট মোহাম্মদ সাইফুল বাশার বাদী হয়ে বেগমগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা তিনজনের নামে ১৯ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ এনে মামলা করেন।