পুলিশি হেফাজতে এক আসামি। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

ফেনীর দাগনভূঞায় গৃহকর্ত্রী মমতাজ বেগম ওরফে পারুল (৪৮) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভুক্তভোগীকে হত্যার কথা জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন আসামিরা।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান জানান, সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) দাগনভূঞা ও ফেনীর সদর থানা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিরা হলেন লক্ষ্মীপুর সদর থানা এলাকার মোবারক হোসেন (২০), ফেনীর দাগনভূঞা থানা এলাকার আব্দুল আউয়াল ওরফে সাদ্দাম (৩৫) এবং ফেনী সদর থানা এলাকার ইয়াব হোসেন শুভ (২০)।

পুলিশ সুপার জানান, গত ১৩ ডিসেম্বর রাতে দাগনভূঞা থানাধীন জায়লস্কর ইউনিয়নের বারাহিগোবিন্দ গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মমতাজ বেগম ওরফে পারুলের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি দা, একটি প্লাস্টিকের ব্যাংক, একটি গ্যাস লাইট, একটি লাঠি, ভুক্তভোগীর গলায় পেচানো একটি পায়জামা, দুটি বোতাম ও একটি গ্লাভস উদ্ধার করা হয়। পরের দিন ১৪ ডিসেম্বর ভুক্তভোগীর ছেলে দাগনভূঞা থানায় মামলা করেন।

হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ও উদ্ধার করা আলামত। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

তিনি আরও জানান, শার্টের বোতাম ও ভুক্তভোগীর গায়ে থাকা কামড়ের দাগের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এক পর্যায়ে সোমবার সকালে প্রধান আসামি মোবারককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা হয় বোতামবিহীন শার্ট ও গ্লাভস। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাদ্দাম ও শুভকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ভুক্তভোগী মমতাজের বাড়িতে টুকটাক কাজ করতেন মোবারক। গত ১৩ ডিসেম্বর সহযোগী সাদ্দাম ও শুভকে নিয়ে ভুক্তভোগীর বাড়িতে লুটপাটের পরিকল্পনা করেন তাঁরা। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভুক্তভোগীকে ডাকতে থাকেন মোবারক। তিনি দরজা খুললে দা ও লাঠি নিয়ে মমতাজের বাড়িতে প্রবেশ করেন আসামিরা। এ সময় ভুক্তভোগীর প্লাস্টিকের ব্যাংক কেটে ৫ হাজার টাকা লুট করেন তাঁরা। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী পাশের কক্ষে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁর মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন শুভ। পরে মমতাজের মুখ চেপে ধরেন মোবারক। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মোবারকের গলায় ভুক্তভোগীর আঁচড় ও আঙুলে কামড় লাগে এবং মোবারকের শার্টের দুটি বোতাম ছিড়ে যায়। এ সময় গলায় পায়জামা পেচিয়ে ভুক্তভোগীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন আসামিরা। পরে স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও ৫ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।

পুলিশ সুপার জানান, গ্রেপ্তার আসামি মোবারক আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।