পুলিশ সদস্যদের জনগণের বন্ধু হিসেবে সব সময় তাঁদের পাশে থাকার এবং নিঃস্বার্থ সেবা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
‘পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪’ উপলক্ষে বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গভবনে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এই নির্দেশ দেন। খবর বাসসের।
মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলেন, সাধারণ মানুষের একমাত্র নির্ভরতার জায়গা পুলিশ। তাই জনগণকে নিঃস্বার্থ সেবা দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে পুলিশ জনগণের বন্ধু হিসেবে সব সময় তাঁদের পাশে থাকবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, মানুষ বিশ্বাস করে, পুলিশই তাদের সাহায্য করবে। জনগণকে সেবা প্রদানের মাধ্যমে জন-আস্থা অর্জনে আপনাদের আরও নিবেদিত হয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
‘সাধারণ মানুষ এখনো থানায় যেতে ভয় পায়, একেবারে বাধ্য না হলে কেউ থানায় যেতে চায় না’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, মানুষের মন থেকে অহেতুক ভীতি ও ঝামেলার শঙ্কা দূর করতে হবে।
মো. সাহাবুদ্দিন আইনি সহায়তা পেতে থানায় আসা মানুষকে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সেবা দিতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের আরও নিবেদিত হওয়ার পরামর্শ দেন।
রাস্তায় রাস্তায় রুটিন চেকিংয়ের নামে কেউ যেন অযথা হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে বিশেষ খেয়াল রাখার তাগিদ দেন তিনি। এ ছাড়া পণ্যবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজির বিষয়ে পুলিশকে সতর্ক থাকতে এবং যারা এই চক্রের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯, অনলাইন পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, অনলাইন জিডি প্রভৃতি সেবার প্রসঙ্গ তুলে ধরে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলেন, ভবিষ্যতে তথ্য ও প্রযুক্তিগত সেবার পরিধি বাড়াতে পুলিশকে আরও সচেষ্ট থাকতে হবে।
তিনি বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য সুশাসনের অন্যতম পূর্বশর্ত হলো আইনের যথাযথ প্রয়োগ।
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের (পুরুষ ও নারী) পেশাদারত্ব ও সাফল্য আজ বিশ্বে স্বীকৃত উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিধান ও নিরাপদ সমাজ প্রতিষ্ঠায় পুলিশ সদস্যদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশ ও জনগণের সেবায় সর্বাত্মক প্রয়াস অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়া ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনে স্মার্ট পুলিশিংয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
‘পুলিশ সপ্তাহ-২০২৪’ উপলক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের সব সদস্যকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধে শাহাদতবরণকারী, বিভিন্ন সময়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জননিরাপত্তা বিধানকালে জীবন উৎসর্গকারী এবং করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী পুলিশ সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান মহামান্য রাষ্ট্রপতি।
অনুষ্ঠানে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বঙ্গভবনের সচিবগণ, ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
