দেশ ছেড়ে পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া আফগান নারী ফুটবলার, তাঁদের স্বজন ও সংশ্লিষ্টরা। ছবি: রয়টার্স

আফগানিস্তানের নারী ফুটবলাররা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। আপাতত সেখানে থাকলেও সেখান থেকেই নিজেদের পছন্দমতো দেশে আশ্রয় প্রার্থনা করবেন তাঁরা। খবর প্রথম আলোর।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের বরাতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে তালেবান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর নারী অধিকার নিয়ে সংশয় শুরু হয়েছে।
নারী অধিকারের দাবিতে দেশটিতে বিক্ষোভও হয়েছে। তালেবান বলছে, শরিয়াহ আইন অনুযায়ী নারীদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। তারা জানিয়েছে, নারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারবে, তবে নারী-পুরুষ একসঙ্গে পড়তে পারবে না। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এবার তারা শুরুতে বলেছিল, নারীদের শিক্ষা বা চাকরিবাকরি করায় বাধা দেবে না। কিন্তু পরবর্তীকালে তারা জনস্বাস্থ্য ছাড়া অন্য সব ক্ষেত্রে কর্মরত মহিলাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি উন্নত না হওয়া পর্যন্ত কাজে না আসার আদেশ দেয়।

এই পরিস্থিতিতে আফগানিস্তানের নারী ফুটবলাররা দেশ ছেড়ে পালালেন। পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া নারী ফুটবলারদের অনেকেই বয়সভিত্তিক ফুটবল দলের। এ সংখ্যাটা কমপক্ষে ৮১। বৃহস্পতিবার আরও ৩৪ জনের পাকিস্তানে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তা উমর জিয়া বলেন, ‘আপাতত পাকিস্তানে থাকবেন এই ফুটবলার ও তাদের পরিবার। ৩০ দিন পর তাঁরা তৃতীয় কোনো দেশে চলে যাওয়ার জন্য আবেদন করবেন।
আমেরিকা, ইংল্যান্ড কিংবা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে তাঁদের পাঠানোর ব্যাপারে চেষ্টা করবে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। তোরখাম সীমান্ত দিয়ে তাঁরা পাকিস্তান পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। পাকিস্তানের লাহোরের গাদ্দাফি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

কিছুদিন আগে একজন তালেবান মুখপাত্র একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেছেন, তিনি মনে করেন না নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়ার কোনো কারণ আছে। তিনি নারীদের খেলাধুলায় অংশগ্রহণকে ‘ইসলামবিরোধী’ আর ‘অপ্রয়োজনীয়’ হিসেবে বর্ণনা করেন।

তালেবান দখলদারির শুরুতেই আফগানিস্তান নারী ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক মেয়ে ফুটবলারদের নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সব পোস্ট মুছে ফেলার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি তাঁদের খেলার সামগ্রীগুলো পুড়িয়ে ফেলতে বলেছিলেন।