প্রতীকী ছবি

দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ও অর্থনীতির নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলতে ঢাকা-পায়রা বন্দর-কুয়াকাটা পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। ২১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ রেলপথ নির্মাণের জন্য ইআরডি অর্থায়নের উৎস নিশ্চিত করলেই ডিপিপি অনুমোদনের ব্যবস্থাসহ দরপত্র আহ্বান করা যাবে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় ও প্রকল্প সূত্রের বরাতে বার্তা সংস্থা বাসস জানায়, সমীক্ষা ও নকশা অনুযায়ী, ভাঙ্গা-পায়রা বন্দর-কুয়াকাটা পর্যন্ত রেলপথে নদীর ওপর ৮টি ছোট-বড় রেলওয়ে ব্রিজ নির্মিত হবে। এ ছাড়া ব্রিজের দুপাশে ৩৭ কিলোমিটার ভায়াডাক্ট উড়ন্ত রেলপথ করা হবে। সব লেভেল ক্রসিং হবে আন্ডারপাস, যা রেলওয়েতে এ প্রথম। ব্রডগেজ করা লাইনে ১৮০ কিলোমিটার গতিতে বৈদ্যুতিক ট্রেন (রেলগাড়ি) চালানোর বিকল্প ব্যবস্থা থাকছে। প্রাথমিকভাবে এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা। মেয়াদ ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৯ সালের জুন পর্যন্ত।

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. মামুনুল ইসলাম জানান, পায়রা বন্দর ঘিরে একের পর এক প্রকল্প হবে। পায়রা বন্দরের সঙ্গে রেলপথ সংযুক্ত হলে পায়রা ঢাকার সঙ্গে জুড়ে যাবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে রেলপথে নিশ্চিন্তে পায়রা-ঢাকা পণ্যবাহী ট্রেন চলবে। বন্দর থেকে মাত্র ৩ ঘণ্টায় ঢাকায় পণ্য পৌঁছানো সম্ভব হবে। ঘণ্টায় প্রায় ৭০ কিলোমিটার বেগে ছুটবে এ পথে পণ্যবাহী ট্রেন। এ বন্দর থেকে পর্যাপ্ত পণ্য রেলে বহন করা হবে। সাশ্রয় ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পণ্য পৌঁছে দেওয়া হবে। রেলপথে যানজট হয় না। আমরা সমীক্ষা, নকশা ও টেন্ডার ডকুমেন্ট তৈরি সম্পূর্ণ করেছি। সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশ অর্থায়নের জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে স্টেশন দুটিতে।

রেলপথ সচিব সেলিম রেজা বলেন, রেলে আমূল পরিবর্তন আসছে। চলমান ৪৩টি প্রকল্প সমাপ্ত হলে লাইন বৃদ্ধির সঙ্গে ২ শতাধিক ট্রেন বাড়ানো সম্ভব হবে। আমরা শুধু পণ্যবাহী ট্রেন পরিচালনার জন্য আলাদাভাবে লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি। ঢাকা-পায়রা বন্দর হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত ২১৫ কিলোমিটার রেলপথ হবে রেলের জন্য সবচেয়ে লাভজনক পথ।

রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, আমরা বন্দরমুখী নতুন রেলপথ নির্মাণ করছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষভাবে রেলকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। তাঁর নির্দেশনায় প্রতিটি বন্দরেই রেলপথ সংযুক্ত হচ্ছে। খুলনা-মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণ চলমান রয়েছে। নতুন করে ঢাকা-পায়রা বন্দর-কুয়াকাটা পর্যন্ত নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের মতো পায়রা ও মোংলা বন্দরে রেল সংযুক্ত হলে রেলে আমূল পরিবর্তন আসবে। রেলপথে এসব বন্দর থেকে শুধু ৩০ শতাংশ পণ্য বহন করতে পারলে রেলের পুরো আয়ের কয়েক গুণ বেশি আয় হবে। ট্রান্স এশিয়া রেলওয়ে পণ্য বহনে এ পথ হবে অন্যতম। কুয়াকাটায় পর্যটক বাড়বে। নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলবে দক্ষিণাঞ্চলের।