বাংলাদেশ পুলিশের একটি বিশেষায়িত ইউনিট ‘ট্যুরিস্ট পুলিশ’। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও পর্যটনশিল্প বিকাশে ২০১৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর চালু হয় এ ইউনিট। গঠনের ৯ বছরের মাথায় নাম পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে এই বিশেষায়িত ইউনিটের ইউনিফর্মে আসছে পরিবর্তন। কাজের পরিধি বাড়ায় বাড়ছে জনবলও। খবর জাগো নিউজের।

ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স সূত্রে জানা যায়, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজারসহ সাত শতাধিক পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে বাংলাদেশে। পর্যটন করপোরেশনের হিসাবমতে, প্রতিবছর এসব পর্যটন এলাকায় ভ্রমণ করেন ৬০ লাখ দেশি-বিদেশি পর্যটক। প্রতিষ্ঠালগ্নে ৬৯৯ সদস্য ও কর্মকর্তা নিয়ে যাত্রা শুরু করে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ২০১৫ সাল থেকে শুরু হয় অপারেশনাল কাজ।

দেশের ৩৬টি জেলায় ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম বিস্তৃত। জনবলের সংখ্যা এখন ১ হাজার ২৫৬ জন। জরুরি প্রয়োজনে কিংবা পর্যটন ইস্যুতে যেকোনো যোগাযোগের জন্য রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ হটলাইন নম্বর ০১৩২০-১৬৩৫৯৯। এ ছাড়া ‘হ্যালো ট্যুরিস্ট’ নামে রয়েছে অ্যাপস। পর্যটকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে অ্যাপসের মাধ্যমে সহায়তা করা হয়।

সূত্র জানায়, ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে নাম পরিবর্তন একটি। ট্যুরিস্ট পুলিশ থেকে নাম পরিবর্তিত হয়ে হতে যাচ্ছে ‘ট্যুরিজম পুলিশ’। জেলা পুলিশের সঙ্গে ট্যুরিস্ট পুলিশের ইউনিফর্ম অনেকটা মিলে যাওয়ায় এই বাহিনীর জন্য আসছে নতুন ইউনিফর্ম। সঙ্গে কাজের পরিধি বাড়ায় এবং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের বিশেষ নিরাপত্তায় বাড়তে যাচ্ছে জনবল।

দেশি-বিদেশি পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে ২০টি পর্যটন স্পট। এর মধ্যে শুধু কক্সবাজারেই প্রতি বছর যাতায়াত করেন প্রায় ১৫ লাখ পর্যটক। এতসংখ্যক পর্যটকের জন্য সেখানে ট্যুরিস্ট পুলিশের জনবল রয়েছে মাত্র ৪০ জন। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, সি-বিচ, লাবণী, ইনানী বিচসহ সব পয়েন্টে পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও জনবলসংকটে নিরাপত্তার বিষয়টি রয়ে গেছে উদ্বেগের পর্যায়েই। একই অবস্থা দেশের গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় সব ট্যুরিস্ট স্পটেও।

পর্যটনসম্পদ ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা, প্রত্নসম্পদ চুরি রোধ, পর্যটন আকর্ষণ এলাকায় যৌন হয়রানি বন্ধ, বখাটে ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিহত, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পর্যটকদের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা, পর্যটন অঞ্চলের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ নানা কাজে জড়িত ট্যুরিস্ট পুলিশ।

বর্তমানে দেশের ১১টি রিজিয়নে ৩৬টি জেলায় ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রম বিস্তৃত। ট্যুরিস্ট পুলিশের জনবলের সংখ্যা এখন ১ হাজার ২৫৬ জন। কক্সবাজার, টেকনাফ, কুয়াকাটা, সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, মাধবকুণ্ড, বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, সুন্দরবন, বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা, নওগাঁ ও বগুড়া জেলায় পর্যটকদের ভিড় বেশি হওয়ায় এসব জেলায় ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য ও কার্যক্রম তুলনামূলক বেশি।

ট্যুরিস্ট পুলিশের পুলিশ সুপার (মিডিয়া) এম এ হালিম বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের ইউনিফর্ম পরিবর্তনের কথা রয়েছে। কারণ, জেলা পুলিশের সঙ্গে ট্যুরিস্ট পুলিশের ইউনিফর্ম মিলে যায়। যে কারণে ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করলেও নাম হয় জেলা পুলিশের। ইউনিফর্মের চার থেকে পাঁচটি ডিজাইন প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে শিগগির চূড়ান্ত হতে পারে।