গত আগস্টে আফগানিস্তানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে তালেবান।

আফগানিস্তানে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করার পর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল তারা। এর অংশ হিসেবে জাতিসংঘে চিঠিও দিয়েছিল তালেবান।

বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে কে বা কারা যোগ দিতে পারবে, তা নির্ধারণ করে সংস্থার নয় সদস্যের একটি কমিটি। এই কমিটিতে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন রয়েছে।

তালেবানের চিঠি পাওয়ার পর এ ব্যাপারে কমিটির একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বৈঠকটি হয়নি বলে জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ফলে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের চলতি অধিবেশনে তালেবানের অংশ নেওয়ার চেষ্টা ভেস্তে গেছে।

তালেবানের অংশগ্রহণ ছাড়াই স্থানীয় সময় সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এবারের অধিবেশনের সমাপ্তি ঘটছে।

গত ১৫ আগস্ট কাবুল পতনের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। চলতি মাসের শুরুর দিকে কট্টরপন্থীদের নিয়ে দেশটিতে সরকার গঠন করে তারা। এরপর তারা জাতিসংঘের মতো মঞ্চ থেকে স্বীকৃতি পেতে উদ্যোগী হয়। চীন, রাশিয়া, পাকিস্তানসহ বেশ কিছু দেশ তালেবানের ব্যাপারে কিছুটা নমনীয় মনোভাব দেখালেও আনুষ্ঠানিকভাবে কেউই তাদের সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি।

সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন শুরু হয় ২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের। এই অধিবেশনে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে জাতিসংঘকে একটি চিঠি দেয় তালেবান। গত সোমবার তালেবানের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের কাছে ওই চিঠি দেওয়া হয়। চিঠিতে এবারের অধিবেশনে তালেবানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকিকে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে আবেদন জানানো হয়। চিঠিতে তালেবান বলে, ক্ষমতাচ্যুত আফগান সরকার-নিযুক্ত জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি গোলাম ইসাকজাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ইসাকজাই আর আফগানিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করছেন না।

এক কূটনীতিক এএফপিকে জানান, জাতিসংঘের কাছে আবেদন পাঠাতে অনেক দেরি করে ফেলেছে তালেবান। এ কারণে গোলাম ইসাকজাইয়ের এই অধিবেশনে অংশ নেওয়ার সুযোগ বহাল থাকে। তিনি এখনো জাতিসংঘ স্বীকৃত আফগান প্রতিনিধি।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের চলমান অধিবেশনে ইতিমধ্যে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা ভাষণ দিয়েছেন। আফগানিস্তান, মিয়ানমার ও গিনির প্রতিনিধিদের ভাষণের মধ্যে দিয়ে আজ এই অধিবেশন শেষ হওয়ার কথা। তবে এদিন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত কিয়াও মোয়ে তুন অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে পারছেন না। এ ব্যাপারে একমত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও চীন।

মিয়ানমারে গত ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর কিয়াও মোয়ে তুনকে বরখাস্ত করে দেশটির জান্তা সরকার। তাঁর স্থলে একজন সাবেক জেনারেলকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে তাঁর নিয়োগ অনুমোদন করেনি জাতিসংঘ।