পুলিশি হেফাজতে গ্রেপ্তার হওয়া চোর।

বরিশালে চুরি করতে গিয়ে একটি দোকানে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন এক চোর। এ সময় নিজেকে উদ্ধার করতে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে সহায়তা চান তিনি। পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। খবর জাগো নিউজের।

ঘটনাটি ঘটেছে বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের এ আর খান বাজার-সংলগ্ন এলাকায়।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে ওই ব্যক্তিকে চুরির মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

আটক ওই ব্যক্তির নাম মো. ইয়াছিন খাঁ (৪১)। তাঁর গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ছিলারিশ গ্রামে। তবে বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে বরিশাল নগরীর কালুশাহ সড়ক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।

পুলিশ জানায়, মো. ইয়াছিন খাঁ একজন চোর। দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করছেন তিনি। বিভিন্ন থানায় তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক চুরির মামলা ও অভিযোগ রয়েছে। চুরি করাকেই তিনি পেশা বানিয়েছেন। ওই টাকায় তাঁর সংসার চলে।

স্থানীয়রা জানান, চরকাউয়া ইউনিয়নের এ আর খান বাজারের ঝন্টু হাওলাদারের মুদিদোকানের ভেতর থেকে বন্দর থানা (সাহেবের হাট) পুলিশ এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। ওই সময় স্থানীয় কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারছিলেন না। ওই ব্যক্তি কীভাবে তালাবদ্ধ দোকানে ঢুকেছেন। কেনই-বা পুলিশ তাঁকে উদ্ধারের জন্য এসেছে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে সবকিছু স্পষ্ট হয়।

উদ্ধারের পর ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানান, চুরির উদ্দেশ্যে তিনি ভোররাতে ঝাঁপের তালা ভেঙে দোকানে ঢুকেছিলেন। কিন্তু মালামাল চুরি এবং তা নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যাগভর্তি করতে সময় গড়িয়ে সকাল হয়ে যায়। দোকানের সামনে লোকজনের আনাগোনা বেড়ে যায়। তখন আর দোকান থেকে মালামাল নিয়ে পালানোর সুযোগ ছিল না। আর ধরা পড়লে জনতার হাতে মারধরের শিকার হবেন, এমন আশঙ্কা থেকে ৯৯৯-এ কল করে সহায়তা চেয়েছেন।

স্থানীয়রা আরও জানান, এ রকম বুদ্ধিমান চোরের কথা আগে তাঁরা শোনেননি। এলাকায় সারা দিন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলেছে।

বন্দর থানার (সাহেবের হাট) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, আটক মো. ইয়াছিন খাঁ সকালে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে জানান, তিনি খুব বিপদে পড়েছেন। তাঁকে যেন দ্রুত পুলিশ এসে উদ্ধার করে। এ সময় তাঁকে কনফারেন্সে রেখে ৯৯৯ থেকে বন্দর থানার (সাহেবের হাট) ডিউটি কর্মকর্তাকে জানানো হয়, সম্মানিত একজন সিটিজেন বিপদে পড়েছেন। তাঁকে দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা নেন। এ সময় কনফারেন্সে থাকা ইয়াছিন খাঁ তাঁকে কোথা থেকে উদ্ধার করার প্রয়োজন, সেই ঠিকানা জানান। কিন্তু চুরি করতে গিয়ে আটকা পড়েছেন, এ বিষয়ে ৯৯৯ বা ডিউটি কর্মকর্তাকে কিছুই বলেননি ইয়াছিন খাঁ।

ওসি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, থানা থেকে আমাকে বিষয়টি জানানো হলে দ্রুত ঘটনাস্থলে একদল পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ সদস্যরা গিয়ে দোকানের ভেতর থেকে তাঁকে উদ্ধার করেন। তাঁকে উদ্ধারের সময় দোকানের মালামাল তছনছ করা ছিল। দোকানের দামি মালামাল ব্যাগে ভরা হয়েছিল। তাঁর ওপর পুলিশের সন্দেহ হচ্ছিল।

তিনি আরও বলেন, এরপর দোকান থেকে বের হতে তাঁর অসুবিধা কোথায় জানতে চাইলে পুলিশ সদস্যদের ইয়াছিন খাঁ বলেন, চুরির মালামাল গুছিয়ে ব্যাগ ভর্তি করতে তাঁর বেশি সময় লেগেছে। সময় গড়িয়ে সকাল হয়ে গেছে। লোকজন দোকানের পাশে অবস্থান করছিল। এই অবস্থায় সেখান থেকে বের হলে তাঁর রক্ষা হতো না। তাঁর জীবনের ঝুঁকি ছিল। তাঁর এসব কথা শুনে উদ্ধার করতে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা কিছুটা অবাক হয়েছেন। পরে তাঁকে একটি চুরি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।