পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) দেশে নতুন এক জঙ্গি সংগঠনের সন্ধান পেয়েছে। অভিযান চালিয়ে তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ (আল-জিহাদী) নামের সংগঠনটির প্রধানসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে এটিইউ। দেশের উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও ঢাকা মহানগরী এলাকায় ১৩ সেপ্টেম্বর (বুধবার) থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর (শনিবার) পর্যন্ত এসব অভিযান পরিচালিত হয়।

গ্রেপ্তার তিনজনের নাম মো. জুয়েল মোল্লা (২৯), মো. রাহুল হোসেন (২১) ও মো. গাজিউল ইসলাম (৪০)। তাঁদের মধ্যে জুয়েল মোল্লার বাড়ি বাগেরহাটে। রাহুল ও গাজিউলের বাড়ি জয়পুরহাটে। জুয়েল নতুন এই জঙ্গি সংগঠনের প্রধান।

এটিইউর পুলিশ সুপার (অপারেশনস) মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইংয়ের (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বিএম পিপিএম (বার) জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এটিইউ ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশের দেশের উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চল ও ঢাকা মহানগরী এলাকায় সিরিজ অভিযান পরিচালনা করে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ (আল-জিহাদী)’-এর শীর্ষ নেতা জুয়েল মোল্লা এবং সংগঠনের সক্রিয় দুই সদস্য রাহুল হোসেন ও গাজিউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে।

এটিইউর পুলিশ সুপার জানান, বেশ কিছুদিন আগে এটিইউর বিশেষ গোয়েন্দা দল জানতে পারে, তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ (আল-জিহাদী) নামের একটি নতুন উগ্রবাদী সংগঠনের কয়েকজন সক্রিয় সদস্য নিজ সংগঠনের জন্য সদস্য সংগ্রহের জন্য তৎপরতা চালাচ্ছে। তারা সশস্ত্র উগ্রবাদী মতবাদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা ও নানামুখী সন্ত্রাসী হামলার ছক কষে উসকানিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। নতুন এই সংগঠনের শীর্ষ নেতা ও অন্যান্য সদস্যরা আইটি সম্পর্কে অধিকতর জ্ঞান অর্জন, বোমা তৈরির কৌশল শিক্ষা এবং সংগঠন পরিচালনার জন্য অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। এই অবস্থায় এটিইউর অপারেশন উইংয়ের একাধিক টিম ১৩ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী অভিযান শুরু করে। প্রথমে বাগেরহাটের রামপাল থেকে গ্রেপ্তার করা হয় জুয়েলকে। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় নতুন জঙ্গি সংগঠনের আটটি পতাকা। তিনি নিজেকে সংগঠনের শীর্ষ নেতা দাবি করেন। এর আগে তিনি উগ্রবাদী কাজে জড়িত থাকার অপরাধে কারাগারে ছিলেন বলেও জানা গেছে। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় রাহুলকে। তিনি নতুন জঙ্গী সংগঠনের দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যক্তি। তিনি প্রচার-প্রচারণা, সদস্য সংগ্রহ এবং বোমা ও অস্ত্র সম্পর্কিত বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর ভাসানটেক এলাকা থেকে গাজীউল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি সংগঠনটির জন্য অর্থ ও সদস্য সংগ্রহের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন।

এটিইউর পুলিশ সুপার (অপারেশনস) মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বিএম পিপিএম (বার) আরও জানান, নতুন সংগঠনটির শীর্ষ ব্যক্তিরা এরই মধ্যে অসংখ্য সদস্য সংগ্রহ করেছে। তাদের কেউ কেউ নিষিদ্ধ ঘোষিত আনসার আল ইসলাম বা আনসার-উল্লাহ বাংলা টিমের অনুসারী ছিলেন। এটিইউ তাদের নামের তালিকা করে গ্রেপ্তারের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।