মানিকগঞ্জ থানা-পুলিশের হেফাজতে চোর চক্রের গ্রেপ্তার ২ সদস্য। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

মানিকগঞ্জ শহর ও পৌর এলাকার বিভিন্ন এলাকায় গত ২৬ এপ্রিল রাতে ১৫টি দোকানে চুরির ঘটনায় চোর চক্রের ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা ও গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের একটি আভিযানিক দল। বুধবার (৩ মে) ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কলাতিয়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- সিলেটের গোপালগঞ্জ থানার ভাদেশ্বর এলাকার চুনু মিয়ার ছেলে তানভীর হোসেন ইসলাম (২৩) ও হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার আছই মিয়ার ছেলে মোস্তফা মিয়া (২২)। এ সময় তাদের হেফাজত থেকে চোরাই মালামাল উদ্ধার করা হয়।তারা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত অপর দুই সহযোগী পলাতক আসামি হাসন ও রিপনের নাম প্রকাশ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

জানা যায়, ২৬ এপ্রিল দিনগত রাতে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে ব্যবসায়ীরা বাড়ি চলে যান। পরে গভীর রাতে জেলা শহরের শহীদ রফিক সড়কের পাশে (মানিকগঞ্জ সরকারি উচ্চবিদ্যালয়-সংলগ্ন) অবস্থিত সিটি ড্রাগ হাউজ, সবুজ ফার্মেসি, মায়ের দোয়া স্টেশনারি, দেশ লাইব্রেরি, স্যামসং মুঠোফোনের শোরুমে হানা দেয় চোরেরা। এ সময় দোকানের শাটার ভেঙে সিটি ড্রাগ হাউজ থেকে তিন হাজার টাকা, সবুজ ফার্মেসি থেকে ১৬ হাজার টাকা এবং দেশ লাইব্রেরি থেকে তিন হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়।

একই রাতে সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের সামনে গঙ্গাধরপট্টি সড়কের পাশে অবস্থিত জ্ঞানোদা স্টেশনারি, মা জেনারেল স্টোর, শিকদার কমিউনিকেশন এবং খান ভ্যারাইটিজ স্টোরে চোরেরা হানা দেয়। এ সময় একই কৌশলে দোকানের শাটার ভেঙে চোরেরা দোকানের ভেতরে প্রবেশ করে।

এদিকে একই রাতে দোকানের শাটার ভেঙে শহরে সরকারি মহিলা কলেজের হোস্টেল সড়কের পাশে তমাল রাইচ এজেন্সিসহ তিন দোকানে এবং গঙ্গাধরপট্টি সর্বজনীন দুর্গামন্দিরের সামনে সন্তোষের দোকানে হানা দেয় চোরেরা। এসব দোকান থেকে অর্থ ও জিনিসপত্র চুরি করা হয়। এ ছাড়া একই রাতে পৌর এলাকার জয়রা সড়কে জুমা স্টোর নামের মনিহারি দোকানের শাটার ভেঙে ভেতরে ঢোকে চোরেরা। এসব ঘটনায় মা জেনারেল স্টোরের মালিক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, পরদিন ২৭ এপ্রিল মানিকগঞ্জ সদর থানায় মামলা করেন।

ঘটনার পরদিন সকাল ১০টায় চুরি হওয়া ১৫ দোকান পরিদর্শন করেন মানিকগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ গোলাম আজাদ খান (পিপিএম-বার)। একইদিন বিকেলে তিনি তাঁর কার্যালয়ে ডেকে চুরির ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহম্মেদ (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্), অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামরুল হাসান (সদর সার্কেল), মানিকগঞ্জ থানার ওসি আ. রউফ সরকার ও জেলা গোয়েন্দা শাখার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদের সমন্বয়ে একটি আভিযানিক দল গঠনের নির্দেশ প্রদান করেন।

পরবর্তীতে পুলিশ পরিদর্শক মজিবুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক মোশারফ হোসেন, এসআই টুটুল উদ্দিন, এসআই জুলহাস মিয়া, এসআই আজাহারুল ইসলাম, এসআই মনিরুল ইসলাম, এসআই জুয়েল রানা ও এএসআই ইমরান হাসান শহরের বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্যপ্রযুক্তি ও সোর্সের সহায়তায় ঘটনা বিশ্লেষণ করেন।

এরই ধারাবাহিকতায় ৩ মে ওসি আ. রউফ সরকারের তত্ত্বাবধায়নে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মজিবুর রহমানের পরিচালনায় এসআই টুটুল উদ্দিনের নেতৃত্বে অফিসার ফোর্সের সমন্বয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।