কক্সবাজারে দুদিনের সরকারি সফরের শেষ দিনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার) পিপিএম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সংঘটিত হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। অপরাধী যে-ই হোক, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঘোনারপাড়া পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় সেখানে গাছের চারা রোপণ করেন আইজিপি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

আইজিপি কক্সবাজারে দুদিনের সরকারি সফরের শেষ দিনে ৩ মে (বুধবার) উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বিকেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

আইজিপি বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাভাবিক আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ কাজ করছে। আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না। আজ আমরা অফিসারদের সাথে বসেছি, তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি এবং আমাদের কর্মকৌশল নির্ধারণ করেছি।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘আগামীতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও উন্নত হবে। যেকোনো ঘটনা সংঘটিত হলে কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। অপরাধী যে-ই হোক, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ আইনশৃঙ্খলার স্বাভাবিক গতি ভঙ্গ করার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আইজিপি কক্সবাজারে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) কর্মরত অফিসারদের সাথে মতবিনিময় করেন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

কক্সবাজার ট্রলারে ১০ জেলের প্রাণহানির ঘটনা প্রসঙ্গে আইজিপি বলেন, ‘এ ঘটনা জানার সাথে সাথে আমি রেঞ্জ ডিআইজিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছি। সিআইডি এবং পিবিআইর টিম পাঠানো হয়েছে। ইতোমধ্যে আসামি ধরা পড়েছে এবং তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘অপহরণের প্রতিটি ঘটনা আমরা তদন্ত করছি। তদন্তে আমাদের সফলতা রয়েছে। যারা অপহরণের ঘটনার সাথে জড়িত, তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করেছি, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কাউকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।’
আইজিপি ইউএনডিপি এবং ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধিদলের সাথে সাক্ষাৎ করেন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

আইজিপি যেকোনো ঘটনা ঘটার সাথে সাথে দ্রুততম সময়ে পুলিশকে জানানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে নিকটস্থ পুলিশ ইউনিট অথবা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করুন, আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’ তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে আমরা কাজ করছি। র‍্যাব সুন্দরবনকে জলদস্যমুক্ত করার জন্য কাজ করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে জলদস্যমুক্ত ঘোষণা করেছেন। আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের মধ্যে যারা স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে চেয়েছে, তাদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।’
রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন আইজিপি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

আইজিপি বলেন, ‘মাদকের বিরুদ্ধে আমরা সারা দেশে অভিযান পরিচালনা করছি এবং আমাদের যথেষ্ট সফলতা রয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল গ্লোবাল টেররিজম ইনডেক্সে বর্তমানে বাংলাদেশের অবস্থা ভালো হয়েছে। আমরা সবাই মিলে কাজ করার ফলেই এ সফলতা এসেছে।’ সন্তান কোথায় যায়, কী করে, কার সাথে মেশে, সে ব্যাপারে খোঁজখবর রাখার জন্য এ সময় আইজিপি অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানান।

এর আগে আইজিপি কক্সবাজারে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) কর্মরত অফিসারদের সাথে মতবিনিময় করেন। তিনি ঘোনারপাড়া পুলিশ ক্যাম্প পরিদর্শন এবং সেখানে গাছের চারা রোপণ করেন। পরে তিনি কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলনকক্ষে কক্সবাজারে কর্মরত অফিসারদের সাথে মতবিনিময় করেন। এর আগে ২ মে সন্ধ্যায় আইজিপি ইউএনডিপি এবং ইউএনএইচসিআর প্রতিনিধিদলের সাথে বৈঠক করেন।

আইজিপি কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপারের সম্মেলনকক্ষে কক্সবাজারে কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

এপিবিএনের অতিরিক্ত আইজিপি ড. হাসান উল হায়দার বিপিএম, অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) মো. আতিকুল ইসলাম বিপিএম (বার) পিপিএম (বার), কক্সবাজার জেলার পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম এবং অন্যান্য কর্মকর্তা আইজিপির সাথে ছিলেন।