প্রথম দুই ম্যাচেই পাওয়ার প্লেতে ব্যাটিং দৈন্য ফুটে উঠছে বাংলাদেশের। ছবি: বিসিবি

টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুই ম্যাচ খেলে ফেলেছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচেই অনেকটা ছন্নছাড়া ব্যাটিং করেছেন ব্যাটাররা। প্রথম ম্যাচে তো স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হেরেই বসেছে দল। দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে জিতলেও ব্যাটিংয়ের দৈন্যদশা কাটেনি।
টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ছয় ওভার ‘পাওয়ার প্লে’। এই সময়টায় শুধু দুজন ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের বাইরে থাকতে পারেন। ব্যাটাররা এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে দ্রুত রানের চাকা সচল রাখেন।

প্রথম আলোর খবরে বলা হয়, টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে এই ‘পাওয়ার প্লের’ ব্যাপারটা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মাথায় থাকে না, নাকি তাঁরা এর সুবিধাই নিতে জানেন না—এ প্রশ্ন উঠতেই পারে। প্রথম ম্যাচে স্কটিশদের বিপক্ষে ১৪০ রান তাড়া করতে নেমে ৬ রানে হারের ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ রান তোলে মাত্র ২৫, সেটি ২ উইকেট হারিয়ে। তাতে নাহয় একটা যুক্তি থাকতে পারে, প্রতিপক্ষের রান তাড়া করতে নামার বিষয়টি। কিন্তু গতকাল! ওমানের বিপক্ষে আগে ব্যাটিং করেও তো পাওয়ার প্লে সুবিধা নিতে দেখা গেল একই ধরনের জড়তা। স্বাগতিকদের বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ রান তুলতে পেরেছে ২ উইকেটে ২৯!

কাল ওমানের বিপক্ষের জয়টা এসেছে অনেক শঙ্কা জাগিয়ে। ব্যাটিংটা ছিল আগের মতোই ছন্নছাড়া। বোলিংয়ের সময় ওমানি ব্যাটসম্যান যতীন্দর সিং আর কাশ্যপ প্রজাপতি রীতিমতো পরীক্ষাই নিয়েছেন। যদিও অভিজ্ঞতা বলা হোক আর যা–ই বলা হোক, বাংলাদেশ শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা জিততে পেরেছে এবং ভালোভাবেই জিততে পেরেছে।

অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর কাছে জয়টা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার রসদ—এর বাইরে কিছুই নয়। কাল ওমানের ইনিংসের শেষ দিকে লং অফে দুটি ক্যাচ নিয়েই সেটি তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন। ক্যাচ নেওয়ার পর উদ্‌যাপন করতে তাঁর কাছে ঘেঁষতে দেননি কাউকেই। হাত ইশারা করেই যার যার ফিল্ডিং পজিশনে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছিলেন। ম্যাচ শেষেও মাহমুদউল্লাহর শরীরী ভাষায় যা ফুটে উঠেছে, তাতে উদ্‌যাপনের কিছু ছিল না। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হেরে প্রতিযোগিতা শুরুর পর ওমানের বিপক্ষেও বারবার আতঙ্কের মধ্যে পড়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত জয়—উদ্‌যাপন আসে নাকি!

মাহমুদউল্লাহ ওমান ম্যাচের পর উন্নতির তাগাদা দিয়েছেন দলকে। তবে তাঁকে জয়ের পরও সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে পাওয়ার প্লের ব্যাটিংটা। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে বৃহস্পতিবারের শেষ ম্যাচের আগে বাংলাদেশ অধিনায়কের চাওয়া এই পাওয়ার প্লের সময় ব্যাটিংয়ের উন্নতি, ‘আমরা কিছু জায়গায় উন্নতি করতে চাই। কিছু ভুল শোধরাতে চাই। আমি মনে করি, প্রথম ছয় ওভারের ব্যাটিংয়ে উন্নতি করা দরকার। এই সময়ের বোলিংয়েরও। শেষের দিকে বোলিংটা ভালো হচ্ছে—এটা স্বস্তির।’

ওমানের বিপক্ষে জয়টা প্রত্যাশা পূরণ ছাড়া আর বাড়তি কিছু নয় বলেই মনে করেন মাহমুদউল্লাহ, ‘আমরা জিতেছি, এ জন্য খুশি। কিন্তু আমাদের অনেক জায়গায় উন্নতি করতে হবে। আমি আশা করি, আজ জয়ের পর সকলেই খুশি। দর্শকদের ধন্যবাদ, যাঁরা মাঠে এসেছেন খেলা দেখতে। দর্শকদের জন্য, দেশের জন্য একটা জয় পাওয়া অনেক বড় ব্যাপারই।’