পিবিআইয়ের হেফাজতে গ্রেপ্তার এক আসামি। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

অনলাইন জুয়া ও নেশার টাকার জন্য রবিউল ইসলামকে গলা কেটে হত্যার পর অটোরিকশা ছিনতাই মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই নরসিংদী জেলা। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয় অটোরিকশা এবং হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি।

গত ২৯ জুন সকালে নরসিংদীর শিবপুর থানার সাতপাইকায় রাস্তার পাশে নয়ন মিয়ার ধানখেতে অজ্ঞাতনামা এক কিশোরের জবাই করা লাশের খবর পায় পুলিশ। এরপর পিবিআই নরসিংদী জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মো. এনায়েত হোসেন মান্নানসহ পিবিআই নরসিংদী জেলার ক্রাইম সিন টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে ছায়া তদন্ত শুরু করে।

ক্রাইম সিন টিম তথ্যপ্রযুক্তি ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ভিকটিমের পরিচয় শনাক্ত করে। পরে রবিউল ইসলামের মা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে শিবপুর থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরে মামলাটি পিবিআই নরসিংদী গ্রহণ করে। পিবিআইয়ের অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদার বিপিএম বার, পিপিএম; ডিআইজি (পূর্বাঞ্চল) মিরাজ উদ্দিন আহমেদ, বিপিএম-সেবা, পিপিএম এবং অতিরিক্ত ডিআইজি (পূর্বাঞ্চল) মো. সাইদুর রহমানের পরামর্শ ও দিকনির্দেশনায় পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান প্রত্যক্ষভাবে ঘটনাস্থলে থেকে তদারকিসহ দিকনির্দেশনা দেন এবং মামলাটির তদন্ত করেন এসআই (নি.) সাদেকুল সিকদার।

সাদেকুল সিকদারসহ পিবিআই নরসিংদীর একাধিক চৌকস টিম নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এরপর সন্দেহভাজন আসামি রাকিবুলকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অটোরিকশাটি নাহিদের মাধ্যমে বিক্রয়ে সহায়তা করেন বলে জানান। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে সন্দেহভাজন আসামি মো. নাহিদ শেখকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়। নাহিদ অটোরিকশাটি বিক্রির কথা স্বীকার করেন এবং যে গ্যারেজে বেচাকেনা হয়েছিল, তা শনাক্ত করেন। এরপর একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে অটোচালককে শনাক্ত করা হয়। এরপর মো. হুমায়ুন (৪০) নামের ওই অটোরিকশাচালককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডের পরে ছিনতাই করা অটোরিকশাটি গ্যারেজ মালিক মো. লিটন খানের (৪৫) গ্যারেজ থেকে উদ্ধার করা হয়।

গ্যারেজ মালিক লিটন খান অটোরিকশাটি ৩০ হাজার টাকায় কেনার কথা স্বীকার করেন। পরে নাহিদকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ছিনতাইকারীদের নাম প্রকাশ করেন। হত্যায় জড়িত ৫ জন আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

তাঁদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, ভিকটিম রবিউল হত্যাকাণ্ড ও অটোরিকশার ছিনতাইয়ে জড়িত আসামি অমি, নিহাল, হাসিব একসঙ্গে চলাফেরা করতেন। তাঁরা অনলাইনে জুয়া খেলতেন এবং নিয়মিত মাদক সেবন করতেন। আসামিরা রবিউলকে হত্যা করে তার অটোরিকশাটি ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। এরপর রবিউলকে কুপিয়ে হত্যা করে অটোরিকশা নিয়ে পালিয়ে যান। নাহিদের চাচাতো ভাই বিশালের বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধার করা হয়।