ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম বলেছেন, জনগণের সেবাপ্রাপ্তি সহজ করার ক্ষেত্রে ‘হ্যালো এসবি অ্যাপ’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের ক্ষেত্রে এটি এক চমৎকার উদ্যোগ। পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ‘হ্যালো এসবি অ্যাপ’ অনন্য সংযোজন।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) সকালে স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) হেডকোয়ার্টার্সের কনফারেন্স রুমে ‘হ্যালো এসবি অ্যাপ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আইজিপি।
স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) সভায় সভাপতিত্ব করেন।
হ্যালো এসবি অ্যাপ’-এর মাধ্যমে ই-পাসপোর্ট/এমআরপি, পাসপোর্ট নবায়ন/সংশোধন, ইমিগ্রেশন সেবা, দ্বৈত নাগরিকত্ব, ভিসা ইস্যু/নবায়ন, নিবন্ধন, সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স, এনজিও-সংক্রান্ত তথ্য, দত্তক, ভ্রমণ ইত্যাদি সেবা সহজে পাওয়া যাবে। এ-সংক্রান্ত কাজে সংশ্লিষ্ট সেবাগ্রহীতাগণ ‘হ্যালো এসবি অ্যাপ’-এর মাধ্যমে অভিযোগ, পরামর্শ ও তথ্য দিতে পারবেন।
এ অ্যাপের মাধ্যমে পাসপোর্ট-সংক্রান্ত অনুসন্ধানপ্রক্রিয়ায় কোথাও অহেতুক মুলতবি থাকলে অথবা এসবি সদস্য কিংবা অন্য কোনো সংস্থার সদস্যের দুর্ব্যবহার অথবা অনৈতিক প্রস্তাব পেয়ে থাকলে তা-ও জানানো যাবে। পাশাপাশি, বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর দিয়ে যাত্রাকালে দেশি-বিদেশি কোনো যাত্রী ইমিগ্রেশন অফিসারের দুর্ব্যবহার বা হয়রানির শিকার হয়ে থাকলে এ অ্যাপের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করা যাবে।
অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের ‘প্লে স্টোর’ থেকে অ্যাপটি ডাউনলোড করা যাবে।
এর আগে এসবি সদস্যগণের উদ্দেশে আইজিপি বলেন, এসবি সবচেয়ে পুরোনো, অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। এসবি জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, রাজনৈতিক, আইনশৃঙ্খলা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ধর্মীয় উৎসব পালনসহ যেকোনো ইস্যুতে আগাম গোয়েন্দা তথ্য দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করে থাকে। রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা রক্ষা ও দেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এসবির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ব্রিফিংয়ে সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া, এসবির ডিআইজি (প্রশাসন) মো. হুমায়ুন কবির বক্তব্য দেন। এসবির বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসার ও ফোর্সগণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আইজিপি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সানুগ্রহে বাংলাদেশ পুলিশের প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে। পুলিশের সক্ষমতা বেড়েছে, পেশাদারত্ব বেড়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে শুধু পুলিশেরই নয়, দেশের সর্বক্ষেত্রে আর্থসামাজিক উন্নয়ন ঘটেছে। মানুষের আর্থিক সক্ষমতা বেড়েছে, ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। আমাদের মাথাপিছু আয় এখন প্রায় তিন হাজার ডলার।
পুলিশপ্রধান বলেন, এসবি অনেক ভালো কাজ করছে। এ জন্য আত্মতুষ্টিতে ভুগলে হবে না। দেশের জন্য আরও ভালো কাজ করতে হবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আরও বেশি তৎপর হতে হবে।
আইজিপি বলেন, প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন ও বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বর্তমানে ডিজিটাল সোর্সের ব্যবহার বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে অন্যান্য সোর্স ব্যবহারের ওপর গুরুত্বারোপ করেন আইজিপি।
আইজিপি এসবির অফিসার ও ফোর্সের কল্যাণসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন।
এ সময় এসবির সুসজ্জিত আধুনিক লাইব্রেরি উদ্বোধন এবং অপারেশনস কন্ট্রোল রুম পরিদর্শন করেন আইজিপি।
সভাপতির বক্তব্যে স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, এসবি সরকারের প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী গোয়েন্দা সংস্থা। নবীন এবং প্রবীণ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে স্পেশাল ব্রাঞ্চ দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পেশাদারত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে। অনেক সফল কাজের পাশাপাশি এসবির রেকর্ড অ্যান্ড আর্কাইভস শাখায় রয়েছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’, ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ইত্যাদি সংকলন।
আইজিপি এসবির বর্তমান কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে একটি তথ্যবহুল ভিডিও চিত্র উপভোগ করেন। তিনি এসবির সার্বিক কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।