প্রতারক চক্রের ৪ সদস্য গ্রেপ্তার।

মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশ নম্বর আপডেটের কথা বলে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার চক্রের মূলহোতাসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি জানায়, বিকাশের চাকরিচ্যুত কর্মীর সহযোগিতায় মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানটির ডিএসওদের ফোন নম্বর ক্লোন করা হতো। ক্লোনের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকার বিকাশ এজেন্টদের ফোন দিয়ে নিজেদের বিকাশ হেড অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিতো। পরে তাদের বিকাশ এজেন্ট নম্বর আপডেটের কথা বলে ওটিপি নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে এজেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নিতো চক্রটি।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন চক্রের মূলহোতা মাহবুব কাজী (২১), বিকাশের চাকরিচ্যুত সাবেক ডিস্ট্রিবিউটর সেলস অফিসার (ডিএসও) শাহরিয়ার নাফিজ ওরফে মিল্টন (২৫), মো. রিপন মিয়া (২৪) ও মো. ইউছুফ মিয়া (১৮)।

গতকাল (বুধবার) জামালপুর থেকে মিল্টন ও রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে মো. ইউছুফ মিয়া ও ফরিদপুরের মালিগ্রাম থেকে মাহবুব কাজীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ৯টি মোবাইল ফোন ও ৫৭টি বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর কোম্পানির সিম জব্দ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে মালিবাগে সিআইডির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের বিশেষ পুলিশ সুপার (এসএসপি) মো. রেজাউল মাসুদ।

তিনি জানান, একজন বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে অভিযোগ আসে, তার দোকানের এলাকার ডিএসওর নম্বর থেকে তার কাছে ফোন করে বলেছে, বিকাশ হেড অফিস থেকে তাকে কল করা হবে, সে যেন তাদের চাহিদার সব তথ্য দেয়। কিছুক্ষণ পর এক ব্যক্তি তাকে ফোন দিয়ে বলেন তিনি বিকাশের হেড অফিস থেকে বলছেন। ওই ব্যক্তি ভিকটিমের বিকাশ এজেন্ট অ্যাকাউন্টটি আপডেটের কথা বলে কৌশলে ওটিপি নিয়ে নেন। ভিকটিমের বিকাশ এজেন্ট নম্বর থেকে ১ লাখ ৭০০ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় একটি চক্র।

সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পায়। পরে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এই চক্রের মূলহোতাসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জানান, মূলহোতা মাহবুব কাজী একজন পেশাদার প্রতারক।
মাহবুব কাজীর দেওয়া বক্তব্য এবং তার কাছ থেকে জব্দ করা মোবাইল বিশ্লেষণ করে জানা যায়, সে এই কাজে খুবই পারদর্শী এবং অভিযোগ করা ভিকটিম ছাড়া আরও অনেক বিকাশ এজেন্ট ও বিকাশ পারসোনাল নম্বর থেকে এই প্রতারক চক্র গত ৩ মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ কাজের জন্য তারা পেইড ভার্সন ক্লোনিং আ্যপস ব্যবহার করে বিকাশের ডিএসওদের নম্বর ক্লোন করে বিভিন্ন এজেন্টকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে প্রতারণা করে আসছে।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে।