প্রতীকী ছবি

পরিবেশ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে দুজন প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. ইমতিয়াজ আহম্মেদ খান ওরফে ইমরুল কায়েস ওরফে জুম্মান খান ও মো. আরাফাত ওরফে লিটন।
সোমবার (২২ আগস্ট) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর থানা এলাকা থেকে তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফউল্লাহ পিপিএম জানান, জনৈক ব্যক্তি ১৩ আগস্ট ‘সুবর্ণ ভূমি রিসোর্ট’-এর ম্যানেজারের কাছে ফোন দিয়ে নিজেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে পরিচয় দিয়ে বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যে রিসোর্টে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। এ সময় ওই ব্যক্তি ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন এবং টাকা দিলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে না। সম্ভাব্য হয়রানির কথা চিন্তা করে রিসোর্টের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তা ছাড়া ‘সুবর্ণ ভূমি রিসোর্ট’-এর পরিবেশ ছাড়পত্র করে দেওয়ার কথা বলে আরও ২৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন কথিত পরিবেশ অধিদপ্তরের সেই অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর।

পরে পরিবেশ ছাড়পত্র-সংক্রান্ত কথা বলার জন্য সেই মোবাইল নম্বরে ফোন দিলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। উল্লেখিত প্রতারণার অভিযোগে সুবর্ণ ভূমি রিসোর্টের ম্যানেজার মো. এনামুল কবিরের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ২১ আগস্ট পল্টন মডেল থানায় একটি মামলা হয়। মামলাটি তদন্ত শুরু করে ডিবি সাইবারের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।

তিনি জানান, বুধবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর থানা এলাকা থেকে ইমতিয়াজ ও আরাফাতকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁদের হেফাজত থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৫টি মোবাইল ফোন, ১৬টি সিম ও ২টি ডায়েরি জব্দ করা হয়।

তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার ইমতিয়াজ এ প্রতারণার মূল হোতা। তিনি ১৩ বছর কুয়েতে ছিলেন। তাঁর কোনো আয়ের উৎস ছিল না। টাকা আয়ের সহজ রাস্তা হিসেবে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ উপার্জন শুরু করেন। গ্রেপ্তার অপর ব্যক্তি আরাফাত ছিলেন ইমতিয়াজের সহযোগী।

অপরাধ প্রক্রিয়া সম্পর্কে ডিবির এ কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা প্রথমে ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইট থেকে বিভিন্ন হাসপাতাল, হোটেল, রিসোর্টসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানা কর্তৃপক্ষের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেন। এরপর টার্গেট করা ব্যক্তির নম্বরে নিজেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে ফোন করতেন। প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্রে বিভিন্ন সমস্যা আছে উল্লেখ করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বড় অঙ্কের জরিমানা করার ভয় দেখাতেন।

পল্টন মডেল থানায় করা মামলায় রিমান্ডের আবেদনসহ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ পিপিএম-এর দিকনির্দেশনায়, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ফজলুর রহমান বিপিএম (সেবা)-এর তত্ত্বাবধানে এবং ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আশরাফউল্লাহ পিপিএমের নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।