পুলিশি হেফাজতে আসামি। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী থানায় মামলা দায়েরের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গৃহবধূ রহিমা আক্তার সুমি (২১) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে জেলা পুলিশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর স্বামী মো. আবু ইউসুফকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যৌতুকের দাবিতে সুমিকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন ইউসুফ।

রোববার (৮ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম পিপিএম জানান, শনিবার (৭ অক্টোবর) সাতক্ষীরা শহরের একটি আবাসিক হোটেল থেকে ইউসুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর থানাধীন নবীপুর গ্রামে।

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম পিপিএম। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে পুলিশ সুপার জানান, ইউছুফ একজন পেশাদার চোর। বিভিন্ন মসজিদে ঢুকে মুসল্লিদের মোবাইল ফোন চুরি করতেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে নোয়াখালীর চাটখিলের বাসিন্দা সুমির সঙ্গে পরিচয় হয় ইউছুফের। এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত এপ্রিলে বাড়ি থেকে পালিয়ে যান সুমি। মাস চারেক আগে ইউসুফকে নিয়ে নিজের বাড়িতে ফেরেন সুমি। পরে সেখানে দুজনের বিয়ে হয়।
জব্দ করা মোবাইল ফোন। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

পুলিশ সুপার জানান, এরপর সোনাইমুড়ী পৌর শহরের একটি ভাড়া বাসায় বসবাস শুরু করেন ইউসুফ ও সুমি। গত ১ অক্টোবর সকালে বিদেশে যাওয়ার জন্য সুমিকে ১ লাখ টাকা যৌতুক এনে দিতে চাপ দেন ইউসুফ। অস্বীকৃতি জানালে সুমিকে মারধর করেন তিনি। এতে সুমির নাক-মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়। পরে সুমির গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন ইউছুফ। সুমির মৃত্যুর পর মেঝেতে লাশ ফেলে বাসার দরজায় তালা ঝুলিয়ে ঢাকায় চলে যান ইউসুফ। পরদিন বাসায় ফিরে স্ত্রীর লাশ টেনেহিঁচড়ে শৌচাগারে লুকিয়ে রাখেন। এরপর শৌচাগারের দরজা বন্ধ করে বাসায় তালা দিয়ে সাতক্ষীরা পালিয়ে যান। সেখানকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে সাতক্ষীরা থানা-পুলিশের সহায়তায় ইউসুফকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাঁর কাছ থেকে ৯টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।