জামালপুরে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ পাওয়াদের কয়েকজন।

জামালপুরের সদর উপজেলার টিকরাকান্দি গ্রামের সোমাইয়া আক্তার রিচি। বাবা হাফিজুল ইসলাম বিনা বেতনে স্থানীয় একটি স্কুলের নৈশপ্রহরী। পুলিশের চাকরির পরীক্ষা কেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য বান্ধবীর কাছ থেকে ৪০০ টাকা ধার করে রিচি দাঁড়িয়েছিলেন জামালপুর পুলিশ লাইনসে। কনস্টেবল পদে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা শুনে আনন্দে কেঁদে ফেলেন তিনি।

সোমাইয়া বলেন, সংসারে আয় রোজগারের কেউ নেই। তাই চাকরিটা তাঁর খুবই প্রয়োজন ছিল।

ভেলামারি গ্রামের মাহমুদ হাসান সোহানের মা-বাবা মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। দুই ভাই-বোনের সংসার চলত তাঁর প্রাইভেট পড়ানোর টাকায়। কোনো ঘুষ দেওয়া ছাড়াই পুলিশে চাকরি পেয়ে সোহান আনন্দে আত্মহারা।

তারতাপাড়া গ্রামের বর্গা চাষি আকরাম হোসেনের ছেলে রাশেদুল এর আগেও কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য মুখোমুখি হয়েছিলেন ৩ বার। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় এসে বাদ পড়ে যান। তবে হতাশ হননি। কঠোর পরিশ্রম আর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে আবারও অংশ নেন। অবশেষে সফলতা আসে।

পুলিশের এই নিয়োগ পরীক্ষার যুদ্ধে অংশ নেন ২ হাজার ৯৫৪ জন। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁদের লিখিত পরীক্ষা হয়। সর্বশেষ সেই পরীক্ষায় যাঁরা কৃতকার্য হন, তাঁদের মধ্য থেকে ১৬৮ জন মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হন। আর সর্বশেষে নারী-পুরুষ মিলে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন ৮৭ জন।

রোববার ১৯ মার্চ রাত ১২টার দিকে জামালপুর পুলিশ লাইনসে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরিপ্রার্থীদের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়।

যাঁরা চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হন, তাদের জেলা পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহামেদ ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

পুলিশ সুপার বলেন, আবেদনকারীদের ঘুষ কিংবা দালালদের মাধ্যমে চাকরির সুযোগ দেওয়া হয়নি। কোনো ধরনের তদবির ছাড়াই শুধু মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ১৩ জন নারী ও ৭৪ জন পুরুষকে কনস্টেবল পদে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়াটি ছিল একটি চ্যালেঞ্জ ও কঠিন কাজ।