বাংলাদেশ পুলিশের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পর্কিত কর্মশালায় ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)-সহ অন্য অতিথিরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, পরিবর্তিত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ পুলিশে সাব-ইন্সপেক্টর, সার্জেন্ট ও কনস্টেবল নিয়োগের ফলে চাকরির থেকে ‘বেস্ট অব দ্য বেস্টস (সেরাদের সেরা)’ লোক আসবে। এ সময় তিনি পুলিশে সম্প্রতি কনস্টেবল নিয়োগের উদাহরণ টানেন।

রাজধানীর একটি হোটেলে ৪ ডিসেম্বর (শনিবার) বাংলাদেশ পুলিশ ও টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের যৌথ আয়োজনে পরিবর্তিত পদ্ধতিতে বাংলাদেশ পুলিশের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পর্কিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ পুলিশের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পর্কিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

বাংলাদেশ পুলিশের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন বক্তব্য দেন। স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত আইজি মো. মাজহারুল ইসলাম। সাব-ইন্সপেক্টর নিয়োগ প্রক্রিয়ার সার্বিক দিক তুলে ধরে বক্তব্য দেন এআইজি (আরঅ্যান্ডসিপি-১) মো. মাহফুজুর রহমান আল-মামুন। অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত আইজিরা, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানের, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা এবং টেলিটকের সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ পুলিশের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পর্কিত কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

বাংলাদেশ পুলিশে সম্প্রতি নতুন পদ্ধতিতে সম্পন্ন হওয়া কনস্টেবল নিয়োগ প্রসঙ্গে দেশের জনগণকে নিশ্চয়তা দিয়ে আইজিপি বলেন, ‘কনস্টেবল পদে জব মার্কেট (চাকরির বাজার) থেকে ‘বেস্ট অব দ্য বেস্টস’ প্রার্থী নিয়োগে আমরা সক্ষম হয়েছি। আমরা মেধার পাশাপাশি শারীরিকভাবে যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করছি।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী এক থেকে দুই বছরের মধ্যে মানুষ এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন দেখবেন।

আইজিপি বলেন, নতুন প্রক্রিয়ায় কনস্টেবল নিয়োগ ছিল একটি দুঃসাহসিক কাজ। সফলভাবে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা বাংলাদেশ পুলিশে এক নবযাত্রার সূচনা করেছেন, সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস। আপনারা এ ইতিহাসের অংশ হয়ে রইলেন।’ তিনি বলেন, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিবর্তনশীল। সময়ের প্রয়োজনে সংগঠনে পরিবর্তন আনতে হয়। যে সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন হয় না, তা মৃত।

বাংলাদেশ পুলিশের ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পর্কিত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশ পুলিশকে উন্নত দেশের উপযোগী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কনস্টেবল, সাব-ইন্সপেক্টর ও সার্জেন্ট নিয়োগ প্রক্রিয়া সংশোধনের মধ্য দিয়ে এ পরিবর্তনের সূচনা করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রায় চল্লিশ বছর পর কনস্টেবল নিয়োগে পরিবর্তন আনা হয়েছে। এ জন্য তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। সহকারী পুলিশ সুপার পদে নিয়োগের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে আইজিপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দর্শন ছিল ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য মেয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রাজ্ঞ নেতৃত্ব ও সুযোগ্য পরিচালনায় বাংলাদেশ শনৈঃশনৈঃ উন্নত হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের বিস্ময়, ম্যাজিক। আর এ ম্যাজিকের ম্যাজিশিয়ান হলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকারের কৃষিবান্ধব নীতির কারণে দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

বাংলাদেশ পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করার জন্য টেলিটক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান আইজিপি। তিনি বলেন, ভবিষ্যতেও টেলিটকের সঙ্গে কাজ করতে বাংলাদেশ পুলিশ আগ্রহী।

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. খলিলুর রহমান বলেন, সরকারি সংস্থা টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড বাংলাদেশ পুলিশসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যুক্ত থেকে স্বচ্ছ নিয়োগে অবদান রাখছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে টেলিটক বিভিন্ন সরকারি সেবা স্বল্প খরচে সহজে জনগণের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে মানুষের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, টেলিটক বাংলাদেশ পুলিশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যুক্ত থেকে স্বচ্ছ নিয়োগে অবদান রাখছে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি পদমর্যাদার কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। সকল রেঞ্জ ডিআইজি এবং জেলার পুলিশ সুপাররা ভার্চুয়ালি কর্মশালায় সংযুক্ত ছিলেন।