চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলনকক্ষে শনিবার সন্ধ্যায় ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দশ উদ্যোগে নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। ছবি: বাসস

মাননীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আজকে মানুষের মাথাপিছু আয় প্রায় তিন হাজার ডলার ছুঁই ছুঁই। আমরা দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে চাই। উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি অব্যাহতভাবে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পান, তাহলে ২০৪১ সালের আগেই দেশ উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর সামনে উদাহরণ। নারীর ক্ষমতায়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি পুরস্কার পেয়েছেন। আগে আমাদের দেশে কি কেউ কখনো ভেবেছে, একজন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ডিআইজি, সচিব, স্পিকার নারী হবেন, এটা কেউ ভাবেনি।

শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলনকক্ষে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দশ উদ্যোগে নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়ে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে। খবর বাসসের।

বাসসের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে ও চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান কলিম সরওয়ারের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন দৈনিক আজাদী পত্রিকার সম্পাদক এম এ মালেক, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক ড. বদিউল আলম।
আলোচনা সভায় পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেন বাসসের বিশেষ সংবাদদাতা মাহফুজা জেসমিন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সিঙ্গাপুরে লিক ওয়ান একনাগাড়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তাঁর ছেলে এখন প্রায় দুই দশকের কাছাকাছি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। যেই দলের নেতৃত্বে সিঙ্গাপুর স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, সে একই দল রাষ্ট্রক্ষমতায় আজ পর্যন্ত।

মালয়েশিয়ায় যে দলের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছিল, দীর্ঘ পঞ্চাশ বছরের বেশি সেই দল রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল। মাহাথির মোহাম্মদ একনাগাড়ে ২২ বছর সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সুতরাং একটা দেশের উন্নয়নে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশে যদি গুজব ছড়ানোর অপরাজনীতি না থাকত, দেশ আরও এগিয়ে যেতে পারত। ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে অবশ্যই দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় নিয়ে যেতে পারব। নারীর অগ্রগতির মাধ্যমে দেশের অগ্রগতি এমন পর্যায়ে যেন আমরা নিতে পারি, দেশকে যেন স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছে দিতে পরি।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের পরিবর্তন হয়েছে। এত অপপ্রচার, প্রতিবন্ধকতা, রাজনীতির জন্য মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা, জনগণের সম্পত্তি বিনষ্ট করা, নিরীহ মানুষের ওপর পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা, সবকিছুতে ‘না’ বলা, এবং দেশে-বিদেশে থেকে অপপ্রচারের রাজনীতি, এত কিছুর মধ্যেও জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে নীরব বিপ্লব ঘটে গেছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ সবাই প্রশংসা করে, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তো তাঁর বাবার দেশ কেনিয়াতে বলেছিলেন, আফ্রিকার দেশগুলোর বাংলাদেশের কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়া প্রয়োজন। আমাদের স্বাধীনতার পঞ্চাশতম বর্ষ উপলক্ষে জো বাইডেন যে বাণী দিয়েছেন, সেখানে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি উন্নয়নশীল বিশ্বের জন্য উদাহরণ। যে বিশ্বব্যাংক আমাদের অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল, সেই বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট, প্রধান অর্থনীতিবিদ, ভারতের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে জার্মান প্রেসিডেন্ট সবাই প্রশংসা করে।

ড. হাছান বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম, ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর করব। ২০২১ সাল আসার দুই বছর আগে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার জন্য কোয়ালিফাই করেছে। এখন বলেছি, ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তর করব। জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি অব্যাহতভাবে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পান, তাহলে ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, ক্ষমতায়ন এমন একটা বিষয়, কেউ কাউকে ক্ষমতা দিতে চায় না। কারণ, আমি যদি আমার ক্ষমতাটা ছেড়ে দিই, তাহলে আমার স্ত্রী ক্ষমতার অধিকারী হবে। বর্তমানে আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। সেই অর্ধেক নারী যদি দেশের কাজে না আসে, তাহলে কিন্তু দেশ এগিয়ে যাবে না।