পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে নিজ কার্যালয়ে পুলিশ সদস্যগণের উদ্দেশে বক্তব্য দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কেউ যাতে বাধা দিতে না পারে, মানুষের জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা কিংবা অগ্নিসন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি যাতে কেউ করতে না পারে, সে জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিজ কার্যালয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দের সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান এবং ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম উপস্থিত ছিলেন। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি।

রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আন্দোলন-সংগ্রাম করবে, ঠিক আছে। জনগণকে নিয়ে করবে। কেউ যদি কোনো ধ্বংসাত্মক কাজ করে, তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে বাংলাদেশের যতটুকু উন্নতি আমরা করেছি, সেটা কিন্তু এমনি এমনি আসেনি। এ জন্য আমাদের শ্রম দিতে হয়েছে, কষ্ট করতে হয়েছে, পরিকল্পনা করতে হয়েছে। যার ফলে মাত্র ১৪ বছরে আমরা বাংলাদেশের বিরাট পরিবর্তন আনতে পেরেছি।
পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

পুলিশের দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক সমস্যার কারণে সৃষ্ট সমস্যা, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সমস্যা, মানবসৃষ্ট দুর্যোগ যেমন অগ্নিসন্ত্রাস বা নৈরাজ্য মোকাবেলায় পুলিশ সদস্যদের চ্যালেঞ্জ নিতে হয়েছে। কাজেই ভবিষ্যতে যাতে আমাদের এই অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা কেউ ব্যাহত করতে না পারে, কেউ যেন আর অগ্নিসন্ত্রাস করার সাহস না পায়। মানুষের জীবনের শান্তি ও নিরাপত্তা যেন কেউ বিঘ্নিত করতে না পারে, সে ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
পুলিশ সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে স্বাগত বক্তব্য দিচ্ছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা দেশের আইনশৃঙ্খলা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আইনশৃঙ্খলাকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্ব পুলিশ বাহিনীকেই পালন করতে হবে। এ জন্য পুলিশ বাহিনীর প্রশিক্ষণ এবং সেক্টরভিত্তিক বাহিনী করে সার্বিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। কারণ, একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পুলিশ বাহিনীকেই এই দায়িত্ব পালন করতে হয়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সম্মানিত অতিথিবৃন্দ। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

অনুষ্ঠানে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এবং জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম। কয়েকজন উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তার কথাও শোনেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এ সময় বাংলাদেশ পুলিশের ওপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

জাতির পিতা যে স্বপ্ন নিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছিলেন, সেটা পূরণ করাই তাঁর একমাত্র লক্ষ্য বলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী একটি জাতি হিসেবে সারা বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে। কারও কাছে হাত পেতে নয়। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন জনগোষ্ঠীর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’।

নারী পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দের সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় সম্মানিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ছবি : বাংলাদেশ পুলিশ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গড়ে উঠেছে। পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস যেন বজায় থাকে, সেটাই বড় কথা। তাঁর সরকারের জনবান্ধব পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার উদ্যোগের ফলে পুলিশ বাহিনীর প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চলমান বিশ্বমন্দার প্রেক্ষাপটে দেশে মন্দা বিরাজ করার কথা উল্লেখ করে বলেন, এই অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলায় আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। তিনি এ সময় দেশের প্রতি ইঞ্চি জমিকে চাষের আওতায় এনে সার্বিক উৎপাদন বাড়ানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন। শেখ হাসিনা বলেন, নিজের খাবারের ব্যবস্থা নিজে করতে হবে যেন আমাদের উদ্বৃত্ত খাদ্য দিয়ে অন্যকে সাহায্য করতে পারি। সেই মানসিকতা নিয়েই আমাদের চলতে হবে।