রাহুল গান্ধী।

ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী তাঁর লোকসভার সদস্যপদ ফিরে পেয়েছেন। মোদি পদবি মামলায় সুপ্রিম কোর্টে সাজা স্থগিতের দুই দিন পর সোমবার লোকসভার সদস্যপদ ফেরত পেলেন তিনি। খবর দ্য ইকোনমিক টাইমসের

ভারতের পার্লামেন্ট এক নোটিশের মাধ্যমে রাহুল গান্ধীর সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

এর আগে শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে আরোপিত শাস্তির ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার সময় মন্তব্য করে, রাহুল গান্ধীর বক্তব্য ‘রুচিকর’ না হলেও তাঁকে পার্লামেন্ট থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হলে তাঁর এলাকার ভোটারদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বিচারপতি গাভাই এ প্রসঙ্গে বলেন, রাহুলকে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হয়েছে বলেই জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাঁর লোকসভার সদস্যপদ খারিজ হয়েছে। সাজা এক দিন কম হলে ওই ধারা প্রযোজ্য হতো না। তিনি বলেন, এ ধরনের জামিনযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার সময় কারণ দর্শানো উচিত। কিন্তু নিম্ন আদালত, এমনকি হাইকোর্টও আবেদন খারিজ করা নিয়ে গাদা গাদা পৃষ্ঠায় বহু কিছু লিখেছেন, কিন্তু কোনো কারণ দেখাননি।

তিন বিচারপতির বেঞ্চ আরও এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের অবতারণা করেছেন। তাঁরা নির্বাচকদের অধিকারের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন।

বিচারপতিরা বলেন, জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮(৩) ধারা প্রয়োগের ফলে শুধু নির্বাচিত সদস্যের অধিকারই খর্ব হয় না, তাতে ওই কেন্দ্রের ভোটারদের অধিকারও খর্ব হয়। নিম্ন আদালতের কারণ না দর্শানোর বিষয়ের পাশাপাশি নির্বাচকদের অধিকারের প্রশ্ন বিবেচনা করে বিচারপতিরা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে দেওয়া সাজা স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন।

কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালে রাহুল গান্ধী ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের নির্বাচনী প্রচারে কর্ণাটকের কোলার জেলায় এক জনসভায় ভাষণ দেওয়ার সময় মোদি পদবি-সম্পর্কিত ওই মন্তব্য করেছিলেন। দুর্নীতির মামলায় জড়িত পলাতক নীরব মোদি, ললিত মোদির নাম উল্লেখ করে তিনি জানতে চেয়েছিলেন, চোরদের পদবি কেন মোদি হয়। ওই ভাষণের পরিপ্রেক্ষিতে গুজরাটের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদি সুরাট জেলা আদালতে রাহুলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানির অপরাধে মামলা ঠুকে দেন। সেই মামলায় তাঁর দুই বছরের সাজা হয়। ফলে রাহুল লোকসভার সদস্যপদও খোয়ান।

এরপর সাজা স্থগিত রাখার জন্য রাহুল প্রথমে সুরাটের দায়রা আদালত ও পরে গুজরাট হাইকোর্টে আবেদন জানান। দুই আদালতেই তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সূত্র: সমকাল।