নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস (আইসিজে)।

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মামলা বিচারের এখতিয়ার নিয়ে আপত্তি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে অং সান সু চির দলের এমপি আর কর্মীদের নিয়ে গঠিত জাতীয় ঐক্যের ছায়া সরকার (এনইউজি)।

এনইউজি বলেছে, রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মামলা বিচারের এখতিয়ার নিয়ে তাদের আর আপত্তি নেই।

গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সামরিক বাহিনী। খবর রয়টার্সের।

মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আইনপ্রণেতা ও প্রশাসনিক কর্মীদের নিয়ে গঠিত এনইউজি গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তাদের এ অবস্থান তুলে ধরে।

সামরিক জান্তা মিয়ানমারের ক্ষমতা দখলের আগে ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির সরকার প্রাথমিকভাবে এ মামলার বিচারে আইসিজের এখতিয়ার নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সু চি নিজেই নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের পিস প্যালেসে উপস্থিত থেকে মিয়ানমার সরকারের পক্ষে শুনানি করেন এবং রাখাইনে সামরিক বাহিনীর হাতে গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন।

রয়টার্স লিখেছে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে নির্বিচার গণহত্যার অভিযোগ এনে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা এ মামলার বিচারে আইসিজের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করা মূলত বিচারপ্রক্রিয়াকে দেরি করিয়ে দেওয়ার একটি চেষ্টা হিসেবে দেখছেন অনেকে।

তবে এনইউজির এই বিবৃতি আইসিজের আইনি প্রক্রিয়ায় আদৌ কোনো প্রভাব ফেলবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

‘নির্বাসিত সরকার’ হিসেবে এনইউজির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, একটি ‘প্রশাসনিক ধ্যানধারণার মধ্যে থেকে’ আইসিজে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে জান্তার অধীনে থাকা মিয়ানমার দূতাবাসের কূটনীতিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে এবং সেটা নিয়ে তাদের আপত্তি আছে।

তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আইসিজে যদি সামরিক জান্তাকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকে, তাহলে তা জান্তাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে এবং মিয়ানমারে প্রতিনিয়ত ঘটে চলা নৃশংস অপরাধ বাড়িয়ে তুলবে।’

এনইউজি আহ্বান জানিয়েছে, আইসিজে যেন জাতিসংঘে মিয়ানমারের স্থায়ী প্রতিনিধি কিয়াও মোয়ে তুনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে। মিয়ানমারে ক্ষমতার পালাবদল হলেও কিয়াও মোয়ে তুন সামরিক জান্তার পক্ষে না থাকার ঘোষণা দিয়ে এনইউজিকে সমর্থন দিয়ে আসছেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আইসিজের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। মিয়ানমারের জান্তার মুখপাত্রও তাদের টেলিফোন ধরেননি।