দশ বছরের ছোট্ট সোহান। এই বয়সে বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করার কথা থাকলেও শুয়ে আছে হাসপাতালের বিছানায়। রক্তের জটিল রোগে ভুগছে শিশুটি। চিকিৎসকদের মতে, রোগটির নাম ইমিউন থ্রম্বোসাইটোপেনিক পারপুরা। সোহানের বাড়ি ঝালকাঠির রাজাপুর থানা এলাকার গোপালপুর গ্রামে। বাবা মারা গেছেন আগেই। বড় এক বোন ও সোহানকে নিয়ে অভাব-অনটনের সংসার চালাচ্ছিলেন মা পারভীন। ছেলের জটিল রোগ ধরা পড়ায় অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।
সম্প্রতি সোহানের অসুস্থতার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীকালে বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির (পুনাক) সভানেত্রী জীশান মীর্জার নজরে আসে। এরপর শিশুটির চিকিৎসায় সহযোগিতা করতে এগিয়ে আসেন পুনাক সভানেত্রী।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) থ্যালাসেমিয়া ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন সোহানকে দেখতে যান পুনাক সভানেত্রী।
তিনি সোহানের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁর চিকিৎসার খোঁজ নেন। পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আতিকুর রহমান সোহানের চিকিৎসার সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে পুনাক সভানেত্রীকে অবহিত করেন।
বাংলাদেশ পুলিশ ও পুনাকের পক্ষ থেকে শিশুটির চিকিৎসার জন্য ৬০ হাজার টাকা তাঁর মায়ের হাতে তুলে দেন জীশান মীর্জা। এ ছাড়া, সোহানের জন্য খেলনা গাড়ি, বেলুন এবং বিভিন্ন ধরনের ফল নিয়ে যান পুনাক সভানেত্রী।
এমন মহানুভবতায় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন সোহানের মা। তিনি পুনাক সভানেত্রীর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানান।
এ সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশে জীশান মীর্জা বলেন, পুনাক সমাজের অসহায় ও দুস্থ মানুষের জন্য কাজ করছে। আমরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোহানের অসুস্থতার খবর পেয়ে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি।
তিনি বলেন, থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কে সচেতন হলে এ রোগ প্রতিরোধ করা যায়। তিনি থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান।
পরে তিনি থ্যালাসেমিয়া রোগের ওপর একটি ডকুমেন্টরি দেখেন এবং থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত শিশু ও তাঁদের অভিভাবকদের অভিজ্ঞতার কথা শোনেন।
পুনাকের স্বাস্থ্য সম্পাদক ডা. প্রথমা রহমান সিদ্দিকী, অতিরিক্ত ডিআইজি রখফার সুলতানা খানম, এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামান এবং কর্তব্যরত চিকিৎসকরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
