খুনসহ ডাকাতি চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার ১২জন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

যশোরের ঝিকরগাছায় খুনসহ ডাকাতি এবং যশোর শহরের ৩টি দোকানে চুরির ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া লুন্ঠিত ও চুরি যাওয়া ১২ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাক জব্দ করা হয়েছে।

আজ বুধবার জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৩ আগস্ট দিবাগত রাত ১টার দিকে ঝিকরগাছা থানাধীন ঝিকরগাছা বাজারের ৪ জন নৈশপ্রহরীকে মুখে স্কচ টেপ পেঁচিয়ে ও হাত বেঁধে কৃষ্ণনগর রাজাপট্টি ‘ঝিকরগাছা অটো ইলেক্ট্রনিক্যাল ওয়ার্কশপ’ নামক দোকানের তালা কেটে দোকান থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকার ব্যাটারি লুন্ঠন করে নিয়ে যায় একদল ডাকাত। এদিকে মুখে স্কচ টেপ পেঁচানো নৈশপ্রহরীদের মধ্যে আব্দুস সামাদ (৭৫) নামের একজন অচেতন হয়ে পড়লে স্থানীয় হাসপাতালে তাঁকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঝিকরগাছায় ডাকাতির সংঘটনের আগে ও পরে যশোর শহরের যুব উন্নয়নের গেট-সংলগ্ন জনৈক টিটো সিকদারের “সিকদার মটরস” নামক মোটর পার্টসের দোকান থেকে ৩৭ লাখ ২০ হাজার টাকার মালামাল চুরি হয় । এ ছাড়া বকচর এলাকায় ‘মেসার্স কর্ণফুলী ট্রেডার্স’ নামক টায়ারের দোকান থেকে ১৬ লাখ ৭২ হাজার ৫০০ টাকার মালামাল চুরি হয়।

জব্দ করা ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ট্রাক। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

এর আগে ৩ আগস্ট দিবাগত রাতে মুড়লী মোড়ে ‘খাদিজা এন্টারপ্রাইজ’ নামের একটি লুব্রিকেন্টের দোকান থেকেও তালা কেটে ৭ লাখ ৯০ হাজার ২০০ টাকার মালামাল চুরি করা হয়।

খুনসহ ডাকাতি ও চুরির পৃথক ঘটনায় ঝিকরগাছা ও কোতোয়ালি থানায় পৃথক মামলা হয়।

জেলার পুলিশ সুপার জনাব প্রলয় কুমার জোয়ারদার বিপিএম (বার), পিপিএমের নির্দেশে মামলাগুলোর তদন্তভার জেলা গোয়েন্দা শাখার ( ডিবি) ওপর ন্যস্ত করা হয়।

ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার পিপিএমের নেতৃত্বে ডিবির এলআইসি টিমের এসআই মফিজুল ইসলাম পিপিএম, এসআই শফি আহম্মেদ রিয়েল, এসআই শামীম হোসেনদের সমন্বয়ে একটি টিম তদন্তের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাত দলকে শনাক্তপূর্বক গোপন তথ্যের ভিত্তিতে কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, বরিশাল, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় অভিযান পরিচালনা করে। অবশেষে ২৩ আগস্ট বিকেলে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানাধীন বরিশাল-ঝালকাঠি মহাসড়কের পাশে একটি পেট্রলপাম্প থেকে ডাকাতি সংঘটনে ব্যবহৃত ট্রাক ( ঢাকা মেট্রো-ড-১৪-৩৩১৪) ও ট্রাকে থাকা ৮ জন ডাকাতকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বরিশাল ও ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে চোরাই পণ্য বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত আরও চারজনকে গ্রেপ্তার এবং লুন্ঠিত/চোরাই মালামালের মধ্যে ১২ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের মালামাল উদ্ধার, ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত ট্রাক, স্কচ টেপ, মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

গ্রেপ্তার ডাকাতেরা হচ্ছেন
শাওন ইসলাম ওরফে সোহাগ (২২), মাহাতাব মৃধা (২০),
রিয়াজ খাঁ (৪২),
শামীম তালুকদার (৩৭),
(মাসুম মোল্লা (২৭),
সবুজ হাওলাদার (২০), শহিদুল খান (৪২) ও সোহাগ সিকদার (২৮)।

ডাকাতি/চোরাই পণ্য বেচাকেনার কাজে জড়িত গ্রেপ্তার চারজন হচ্ছে ন রাসেদুল ইসলাম রাসেল (২৭), এনামুল খান (২৮), শিপন সিকদার (২৮) ও এমাদুল ইসলাম (৩৪)।