হেলমেট পরা এক মোটরসাইকেলচালককে ফুল উপহার দেন জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বিপিএম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

‘পুলিশের হাত থেকে রেহাই পেতে নয়, নিরাপদে বাড়ি ফিরে পরিবারের সঙ্গে দেখা করার জন্য হেলমেট পরুন’ স্লোগানে হেলমেট পরা মোটরসাইকেলচালকদের গোলাপ ও রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে, দেওয়া হয়েছে চকলেট।

জামালপুর শহরের ব্যস্ততম এলাকা দয়াময়ী মোড়ে ২৩ আগস্ট (বুধবার) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হেলমেট পরা মোটরসাইকেলচালকদের এই ফুলেল শুভেচ্ছা ও চকলেট উপহার দিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেন জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বিপিএম।

হেলমেট পরা এক মোটরসাইকেলচালককে ফুল উপহার দেন জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান বিপিএম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে মেনে এবং মাথায় হেলমেট পরে মোটরসাইকেল চালানোর জন্য চালকদের আরও সচেতন করতে এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে জামালপুর জেলা পুলিশ ও জামালপুর ট্রাফিক বিভাগ। এ সময় শহরের ব্যস্ততম রাস্তা দয়াময়ী মোড় চত্বর এলাকায় মোটরসাইকেলচালকদের সচেতন করাসহ হেলমেট পরার অভ্যাস গড়ে তোলার আহবান জানানো হয়। এ ছাড়া যে চালকদের হেলমেট ছিল না, তাঁদেরও চকলেট দিয়ে সতর্ক করা হয়।

মোটরসাইকেল চালকদের উদ্দেশে পুলিশ সুপার বলেন, বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। ট্রাফিক আইন অমান্য করে যানবাহন চালানো রাষ্ট্রীয় অপরাধ। এসব দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলচালকেরা সবচেয়ে বেশি হতাহত হন। এ ক্ষেত্রে মোটরসাইকেলচালকদের অবশ্যই হেলমেট পরে গাড়ি চালাতে হবে। এতে দুর্ঘটনার কবল থেকে মোটরসাইকেলচালকেরা সুরক্ষিত থাকবেন এবং তিনি বেঁচে থাকলে তাঁর পরিবারটি নিরাপদ থাকবে। তিনি বলেন, হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেল চালানো ট্রাফিক আইনে বড় অপরাধ। তাই এসব চালককে সচেতন করতেই পুলিশ মাঠে নেমেছে।

এদিকে পুলিশের ফুল ও চকলেট উপহার পেয়ে খুশি এক মোটরসাইকেলচালক বলেন, ‘যখন পুলিশ থামতে বলে, ভেবেছিলাম, না জানি কোন বিষয়ে ধরা খাইছি। প্রথমে ভয়ে ভয়ে ছিলাম। পরে পুলিশ সুপার নিজ হাতে ফুল ও চকলেট দিলে অনেক অবাক হয়েছি। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ।’

আরেক মোটরবাইকচালক বলেন, ‘যখন আমারে থামাইলো, বললো হেলমেট নেই কেন? খুব ভয়ে ছিলাম, না জানি কত জরিমানা হয়, কী শাস্তি হয়। কিন্তু এসপি সাহেব মোটরবাইকের চাবি প্রথমে নিলেও ভালোভাবে আমাকে হেলমেট পরার উপকারিতা সম্পর্কে বলেছেন, আইন মানতে বলেছেন। একপর্যায়ে চকলেট দিয়ে হাতে চাবিটাও ফিরিয়ে দিয়েছেন। পুলিশ আমাকে সতর্ক করে বলেছে, আজ ছাড়লাম, পরে যেন আর ভুল না হয়। হেলমেট পরে মোটরসাইকেল চালানো আমাদের জন্যই তো ভালো। পুলিশের এমন ব্যবহারে আমি বিস্মিত হয়েছি। এটা আমার সারা জীবন মনে থাকবে।’

পুলিশ সুপার বলেন, ‘চকলেট উপহার দিয়ে সতর্ক করেছি। এটি জামালপুর জেলা পুলিশের একটি চলমান কার্যক্রম। সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে এবং মোটরবাইকচালকদের হেলমেট পরতে উৎসাহিত করতে এ রকম ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ভবিষ্যতেও সব থানা পর্যায়ে অব্যাহত থাকবে।’

এ সময় জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ট্রাফিক বিভাগ কর্মরত পুলিশ অফিসার ও পুলিশ সদস্যরা, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকেরা উপস্থিত ছিলেন।