বিস্ফোরণের পর বেঁচে ফেরা এক পুলিশ সদস্যের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হচ্ছে। ছবি: পুলিশ নিউজ

মালিতে শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নিতে গিয়ে বিস্ফোরণের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশ ফর্মড পুলিশ ইউনিটের (বিএএনএফপিইউ) একটি প্লাটুন। সেখান থেকে বেঁচে ফেরায় তাঁদের হাতে পুরস্কার তুলে দিয়েছেন কমান্ডার মোহাম্মদ শাহিনূর আলম খান। শনিবার (৯ এপ্রিল) মালির গুন্দামে অবস্থিত বাংলাদেশ ফর্মড পুলিশ ইউনিটের চতুর্থ রোটেশনের তৃতীয় মাসিক কল্যাণ সভায় এ পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

বিএএনএফপিইউ জানায়, গত ২৯ মার্চ সকাল ৭টায় বাংলাদেশ ফর্মড পুলিশ ইউনিটের একটি প্লাটুন ওয়াইল্ড বেস্ট ২২/৪ নামক মিশনে অংশ নিতে লং রেঞ্জ পেট্রোলে নিয়াফুঙ্কেতে যায়। মিশন শেষে ক্যাম্পে ফেরার পথে কয়রা তাও নামক গ্রামের কাছাকাছি বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পেট্রোলের কনভয়ে অতর্কিত হামলায় ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) বিস্ফোরিত হয়। এতে বহরের বুলেটপ্রুফ আর্মারড অ্যাম্বুলেন্স মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অ্যাম্বুলেন্সে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. সৈয়দা রহিমা আক্তার রুমি ও মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট এএসআই অরুণা রাজবংশী আহত হন। অ্যাম্বুলেন্সচালক এএসআই মো. সাইফুল ইসলামের সাহসিকতায় কোনো ধরনের গুরুতর আঘাত ছাড়াই তাঁরা বেঁচে ফেরেন। মিশনে অংশ নেওয়া অন্য সদস্যরাও সাহসিকতা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে এই বিপদ মোকাবিলা করেন। পাঁচ দিনের বিশ্রাম শেষে আহতরা পুনরায় কাজে যোগ দেন।

এই সাহসিকতা ও কর্মস্পৃহাকে সাধুবাদ জানিয়ে কমান্ডার মোহাম্মদ শাহিনূর আলম খান তাঁদের পুরস্কৃত করেন। জাতিসংঘ সদর দপ্তর নিউইয়র্ক থেকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ তাঁদের নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন। এই দুর্ঘটনায় সহানুভূতি প্রকাশের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যদের সাহসিকতার ভূয়সী প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ। এ ছাড়া বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছেন।

বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত অ্যাম্বুলেন্স। ছবি: পুলিশ নিউজ

জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশ অত্যন্ত দৃঢ়তা ও সফলতার সঙ্গে কাজ করে আসছে। বর্তমানে মালিতে দুটি ও কঙ্গোতে একটিসহ মোট তিনটি ফর্মড পুলিশ ইউনিট কর্মরত আছে। এর মধ্যে মালির গুন্দামে চলমান মিশনটিকে সর্বাধিক বিপৎসংকুল ও চ্যালেঞ্জিং মিশন বলা হয়। আফ্রিকার সাব-সাহারান এই অঞ্চলে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও চরমপন্থীদের আগ্রাসনের মধ্যে নিরাপত্তা নিশ্চিত তথা স্থিতিশীলতা রক্ষায় ২০১৭ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ। মরুভূমির বুকে প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আইইডি বিস্ফোরণ। এতো প্রতিকূলতার মধ্যেও বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা পেশাদারত্বের সঙ্গে শান্তিরক্ষা মিশন পরিচালনা করে আসছে।