মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে মালির রাজধানী বামাকোতে জাতিসংঘের ক্যাম্পের ভেতরে নির্মিত স্মৃতিসৌধে সশস্ত্র সালাম জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিএএনএফপিইউ-১ (রোটেশন-৮)-এর সদস্যরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কর্মরত বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা পরম শ্রদ্ধা, গর্ব ও ভালোবাসার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদ্যাপন করেছেন। এ উপলক্ষে মালির রাজধানী বামাকোতে ২৬ মার্চ (শনিবার) সকাল থেকে কর্মসূচি শুরু হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২৬ মার্চ সকাল সাড়ে ৬টায় জাতিসংঘের ক্যাম্পের ভেতরে নির্মিত স্মৃতিসৌধে সশস্ত্র সালাম জানিয়ে বিএএনএফপিইউ-১ (রোটেশন-৮)-এর পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন কন্টিনজেন্ট কমান্ডার হাসান মো. শওকত আলী এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও সদস্যরা। এরপর বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন নেটওয়ার্কের (বিপিডব্লিউএন) পক্ষ থেকে কন্টিনজেন্টের অ্যাডমিন অফিসার মোসা. লিজা বেগমের নেতৃত্বে কন্টিনজেন্টের নারী সদস্যরা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতিসংঘের ক্যাম্পের ভেতরে নির্মিত স্মৃতিসৌধে সশস্ত্র সালাম জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিএএনএফপিইউ-১ (রোটেশন-৮)-এর সদস্যরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

এর আগে ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শুক্রবার রাত নয়টায় শহীদদের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিএএনএফপিইউ-১ ক্যাম্পে এক মিনিট প্রতীকী ‘ব্ল্যাকআউট’ ও নীরবতা পালন করা হয়। এ ছাড়া স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বাদ জুমা বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতিসংঘের ক্যাম্পের ভেতরে নির্মিত স্মৃতিসৌধে সশস্ত্র সালাম জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিএএনএফপিইউ-১ (রোটেশন-৮)-এর সদস্যরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

২৬ মার্চ সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএএনএফপিইউ-১ (রোটেশন-৮) আলোচনা সভা ও একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মালিতে মিনুসমার ডেপুটি পুলিশ কমিশনার কন্ট্রোলার জেনারেল মামৌনা ওয়েদ্রাগো। বিশেষ অতিথি ছিলেন অনারারি কনস্যুলার সিমপারা হাম্মানজাবু স্যামুয়েল শুগাবা (ডেপুটি চিফ অব অপারেশন, আনপোল, মিনুসমা ও এফপিইউ কো-অর্ডিনেটর), চিফ অব পার্সোনেল অ্যান্ড ওআইসি চিফ অব স্টাফ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ এন এম মনজুরুল হক মজুমদার, কর্নেল এস এম আলী আযম (চিফ, লাইফ সাপোর্ট সেকশন, মিনুসমা), কর্নেল সাজ্জাদ (ডিসিওএস সাপোর্ট)। এ ছাড়া মিনুসমা, এফপিইউ কো-অর্ডিনেশন অফিসে কর্মরত বিভিন্ন দেশের পুলিশ কর্মকর্তা এবং বেনিন এমইসিএইচসিওওয়াই ও সেনেগাল এফপিইউর কমান্ডাররা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএএনএফপিইউ-১ (রোটেশন-৮) আলোচনা সভা ও একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

অনুষ্ঠানে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার কন্ট্রোলার জেনারেল মামৌনা ওয়েদ্রাগো এবং অন্যান্য বিদেশি অতিথি বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ক্যাম্পের ভেতরে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে স্বাধীনতাযুদ্ধে বীর শহীদদের প্রতি সম্মান জানান এবং সকল বাংলাদেশিকে শুভেচ্ছা জানান। পরবর্তী সময়ে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার তাঁর বক্তব্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশ পুলিশের সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএএনএফপিইউ-১ (রোটেশন-৮) আয়োজিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএএনএফপিইউ-১ (রোটেশন-৮) আয়োজিত ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। এরপর দেশাত্মবোধক গান, কবিতা ও গীতিনাট্যের মধ্য দিয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি ঘটে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন কন্টিনজেন্ট কমান্ডার হাসান মো. শওকত আলী। এ সময় তিনি তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুদৃঢ় নেতৃত্বে এবং ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর অর্জিত স্বাধীনতার সম্মান রক্ষা করতে বাংলাদেশ পুলিশ বদ্ধপরিকর বলে উল্লেখ করেন।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতিসংঘের ক্যাম্পের ভেতরে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন অতিথিরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ