আগামী সোমবার ১০ অক্টোবর দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নের কালনা পয়েন্টে ‘মধুমতী সেতু’ উদ্বোধন করা হবে। ওই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে সেতু উদ্বোধন করবেন বলে নিশ্চিত করেছেন সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) শ্যামল ভট্টাচার্য।

উদ্বোধনের দিন থেকেই সেতুতে গাড়ি চলাচল করতে পারবে। 

জানা গেছে, দৃষ্টিনন্দন মধুমতী সেতু হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। এই সেতুর পূর্ব পাড়ে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলা এবং পশ্চিম পাড়ে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা অবস্থিত। সওজের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাইকার অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। জাপানের টেককেন করপোরেশন ও ওয়াইবিসি এবং বাংলাদেশের আবদুল মোনেম লিমিটেড যৌথভাবে এই সেতুর ঠিকাদারি করছে। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। 

প্রকল্পের কর্মকর্তারা জানান, সেতুর মাঝখানে বসানো হয়েছে ১৫০ মিটার স্টিলের দীর্ঘ স্পেন। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) এ স্পেন তৈরি করা হয়েছে ভিয়েতনামে। ছয় লেনের এই সেতু হবে এশিয়ান হাইওয়ের অংশ। সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার ও প্রস্থ ২৭ দশমিক ১০ মিটার। উভয় পাশে সংযোগ সড়কের দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ২৭৩ কিলোমিটার ও প্রস্থ ৩০ দশমিক ৫০ মিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হচ্ছে ৯৫৯ দশমিক ৮৫ কোটি টাকা। 

সওজ ও পরিবহনসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই সেতু চালু হলে নড়াইল, যশোর, বেনাপোল স্থলবন্দর ও খুলনা থেকে ঢাকায় যাতায়াতকারী পরিবহন মাগুরা-ফরিদপুর হয়ে যাতায়াতের পরিবর্তে কালনা হয়ে যাতায়াত করতে পারবে। এতে বেনাপোল ও যশোর থেকে ঢাকার দূরত্ব ১১৩ কিলোমিটার, খুলনা-ঢাকার দূরত্ব ১২১ কিলোমিটার এবং নড়াইল-ঢাকার দূরত্ব ১৮১ কিলোমিটার কমবে।

মধুমতী সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, মূল সেতু ও সংযোগ সড়কের সব কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর মূল অংশের ল্যাম্পপোস্ট বসানোও প্রায় শেষ। টোলপ্লাজার আটটি বুথে যন্ত্রপাতি বসানোর সামান্য কিছু কাজ বাকি আছে, যা উদ্বোধনের আগেই শেষ হবে। সেতুটি গাড়ি চলার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।