সিরিয়ার জাবলেহ শহরের একটি মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন স্থানীয় ভূমিকম্প দুর্গতরা। ছবি: রয়টার্স

স্মরণকালের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ২৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

দুই প্রতিবেশী দেশের কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবারের ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ২৪ হাজার ১৭৮ জন নিহত হয়েছে। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ২০ হাজার ৬৬৫ জনে দাঁড়িয়েছে।

সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকাগুলোতে মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ১৬৬ জন বলে ওই অঞ্চলের বেসামরিক উদ্ধারকারী দল হোয়াইট হেলমেটস জানিয়েছে।

সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত অংশগুলোতে ১ হাজার ৩৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এই দুই অংশ মিলিয়ে দেশটিতে মোট মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৫১৩ জনে দাঁড়িয়েছে।

শুক্রবার এক ঘোষণায় হোয়াইট হেলমেটস জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর থেকে তারা সিরিয়ার উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে টানা ১০৮ ঘণ্টা ধরে তল্লাশি ও উদ্ধারকাজ চালিয়েছে, এরপর ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকা পড়া জীবিত আর কেউ নেই বলে বিশ্বাস তাদের।

সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলের জিন্দিরেস ও হারাম শহর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এসব এলাকায় নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

সিএনএন জানিয়েছে, তুরস্কের জরুরি বিভাগের কর্মীরা এখনো জীবিতদের ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তূপ থেকে বের করে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আর বেশ কিছু সাফল্য পেয়েছেন তাঁরা, যদিও সেসব অভিযান অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও কষ্টকর ছিল।

দীর্ঘদিন ধরে চলা যুদ্ধের কারণে সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে ত্রাণ সরবরাহে জটিলতা দেখা দিচ্ছে। শুক্রবার সিরিয়ার সরকার ওই সব এলাকায় ত্রাণ সরবরাহের অনুমতি দিলেও কোনো সময়সীমা নির্দিষ্ট করে দেয়নি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, তীব্র শীত ও তুষারপাতের কারণে ‘পরিস্থিতি ক্রমেই নাজুক ও ভয়ঙ্কর’ হয়ে উঠতে থাকায় জীবিতদের মধ্যে যারা গৃহহীন ও আশ্রয়হীন অবস্থায় আছেন, তাঁরা ‘দ্বিতীয় আরেকটি বিপর্যয়ের’ মুখোমুখি হতে পারেন।

ডব্লিউএইচওর ব্যবস্থাপক রবার্ট হোল্ডেন বলেছেন, ‘বহু মানুষ গৃহহীন হয়ে খোলা আকাশের নিচে ভয়াবহ অবস্থায় বসবাস করছে। আশ্রয়, পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছে তারা। এ পরিস্থিতি আরেকটি বিপর্যয় ডেকে আনবে, যা ভূমিকম্পের চেয়েও আরও বেশি মানুষের ক্ষতি করবে।’