এপিবিএনের হেফাজতে গ্রেপ্তার রোহিঙ্গা পরিবার। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইয়াবা বহনের দায়ে একটি রোহিঙ্গা পরিবারের ছয় সদস্যকে আটক করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাদের আটক করা হয়।

এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটার সময় নভো এয়ারের ফ্লাইটে করে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছায় এই পরিবার।

বিমানবন্দরে অবতরণের পর এই পরিবারের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে এয়ারপোর্ট এপিবিএন গোয়েন্দা দল তাদের ওপর নজর রাখতে শুরু করে।

একপর্যায়ে তাদেরকে আটক করে এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে নিয়ে আসা হয়। তৎক্ষণাৎ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা ইয়াবা বহন বা কোনো ধরনের অপরাধে জড়িত থাকার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করে।

নিজেদের তারা বাঙালি পরিবার হিসেবেও দাবি করে। কিন্তু পুলিশের সন্দেহ হয়, পরিবারটি ইয়াবা পাচারের সঙ্গে জড়িত। এই সন্দেহ যাচাই করতে পরিবারের চার সদস্যকে বিমানবন্দর-সংলগ্ন উত্তরার একটি প্যাথলজি সেন্টারে পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় ডাক্তারি পরীক্ষায় শিশু মো. রুবেল (১৫), তার ফুফু আছিয়া বেগম (২৫) ও চাচি জোহুরা বেগমের (৩০) পাকস্থলীতে অস্বাভাবিক বস্তুর উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।

এরপর আরও জোরদার জিজ্ঞাসাবাদের মুখে তারা পাকস্থলীতে ইয়াবা বহনের বিষয়টি স্বীকার করে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিয়াউল আরও জানান, ইয়াবা বহনের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর তাদের জাতীয়তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা নিজেদের রোহিঙ্গা বলেও স্বীকার করে।

ইয়াবা বহনের মূল পরিকল্পনাকারী আছিয়া বেগমের স্বামী আলী আহমদ (২৮)। এ সময় আছিয়া বেগমের সঙ্গে তার দুগ্ধপোষ্য শিশু উমায়ের হোসেন (সাত মাস) ও জহুরা বেগমের দুগ্ধপোষ্য শিশু উম্মে ছালমাও (১০ মাস) তাদের সঙ্গে ছিল। জাতীয়তা ও ইয়াবা বহনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর রাতেই তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যায় এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের একটি দল।

সেখানে উল্লেখিত তিন রোহিঙ্গা নাগরিকের পাকস্থলী থেকে ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে মোট ১৩০টি ইয়াবার প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। প্যাকেটগুলোতে মোট ছয় হাজার ২৭৫ টি ইয়াবা পাওয়া যায়।

বিমানবন্দরে ছয় সদস্যের রোহিঙ্গা পরিবারের কাছ থেকে ১৩০ প্যাকেট ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

শিশু মো. রুবেলের পাকস্থলীতে ৪০ প্যাকেটে মোট এক হাজার ৯৩০ পিস, আছিয়ার পাকস্থলীতে ৫২ প্যাকেটে মোট ২ হাজার ৫১১ পিস ও জহুরা বেগমের পাকস্থলীতে ৩৮ প্যাকেটে ১ হাজার ৮৩৪ পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।

অভিযুক্ত সকলেই মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা। তারা সবাই কক্সবাজার টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের অধিবাসী বলে জানা গেছে।

তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হচ্ছে।