জননিরাপত্তা ও দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়াতে দুটি এমআই-১৭১এ২ হেলিকপ্টার কিনতে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে।

বাংলাদেশ পুলিশ জানায়, গত বছরের ১২ অক্টোবর টিওএন্ডইভুক্ত হেলিকপ্টার দুটি জিটুজি পদ্ধতিতে রাশিয়া থেকে কেনার নীতিগত অনুমোদন দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলতি বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পুলিশ এবং রাশিয়ান প্রতিষ্ঠান জেএসসি রাশিয়ান হেলিকপ্টার্সের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

এরপর হেলিকপ্টার কিনতে তিনটি জিটুজি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় হেলিকপ্টার দুটির দাম নির্ধারণ করা হয় ৪২৮ কোটি ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৩১৬ টাকা। পরে এমআই-১৭১এ২ মডেলের দুটি হেলিকপ্টার কিনতে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির কাছে সুপারিশ করা হয়।

গত ৬ অক্টোবর অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চ্যুয়াল সভায় হেলিকপ্টার দুটি কেনার নীতিগত অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। এরপর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টার দুটি কিনতে সম্মতি দেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ নভেম্বর প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়।

সবশেষ বাংলাদেশ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের হল অব প্রাইডে ১৯ নভেম্বর (শুক্রবার) চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি), বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ, বিপিএম (বার) এবং জেএসসি রাশিয়ান হেলিকপ্টার্সের মহাপরিচালক আন্দ্রে বগিনস্কি ভার্চ্যুয়ালি নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

অনুষ্ঠানে মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সান্ডার মন্টিটস্কি, বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিরা, ঢাকায় পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন। জেএসসি রাশিয়ান হেলিকপ্টার্স প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক আন্দ্রে বগিনস্কি এবং অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চুক্তি অনুযায়ী, আগামী এক বছরের মধ্যে হেলিকপ্টার দুটি বাংলাদেশ পুলিশের বহরে যুক্ত হবে। হেলিকপ্টার দুটি পুলিশ সদস্য দ্বারা পরিচালিত
করার লক্ষ্যে ৪ জন সহকারী পুলিশ সুপারকে পাইলট প্রশিক্ষণের জন্য আর্মি এভিয়েশন পরিচালিত বেসিক এভিয়েশন ট্রেনিং (৬৩ সপ্তাহ) করানো হয়। প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সার্বিক সহযোগিতা করেছে।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা হলেন সহকারী পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার হোসাইন, সহকারী পুলিশ সুপার মো. মুশফিকুল হক, সহকারী পুলিশ সুপার ফাতেমা-তুজ-জোহরা এবং সহকারী পুলিশ সুপার মো. আবুল হোসাইন।

তাঁদের মধ্যে ৩ জন র‌্যাব এবং ১ জন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে পদায়িত। মো. সারোয়ার হোসাইন, মো. মুশফিকুল হক ও মো. আবুল হোসাইন সফলভাবে একক উড্ডয়ন করতে সক্ষম হন।