উগ্রবাদ প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য অংশীজনের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় অতিথিরা। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ দমন করে উন্নয়নের মহাসড়কে চলছে।

মতবিনিময় সভায় যোগ দিতে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে প্রধান অতিথি মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামকে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

উগ্রবাদ প্রতিরোধে শরীয়তপুরে জনপ্রতিনিধি ও অংশীজনদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় আইজিপি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট এই সভার আয়োজন করে। শরীয়তপুর জেলা পুলিশের সার্বিক সহযোগিতায় শরীয়তপুর জেলা পুলিশ লাইনসে ২১ মে (শনিবার) সকাল সাড়ে ১০টায় সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
মতবিনিময় সভায় যোগ দিতে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে বিশেষ অতিথি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)-কে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

‘উগ্রবাদ প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধি ও অন্যান্য অংশীজনের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভাটিতে প্রধান অতিথি ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন। ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)-ও অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন প্রধান অতিথি মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার) পিপিএম; ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ; ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) ও শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার এস এম আশরাফুজ্জামান। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. পারভেজ হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ডিএমপির সিটিটিসির অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান বিপিএম (বার)।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালু হলে জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) ১ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাওয়ার গবেষণা ছিল। এখন মনে হয় সেটা ২ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। পদ্মা সেতুর টাকা, যেটা ২৫ বছরে ফেরত আসার কথা, এখন দেখা যায়, সেটা ১৫-১৬ বছরে উঠে আসবে।’ তিনি বলেন, ‘সেতু বিভাগ অর্থ বিভাগের সঙ্গে চুক্তি করেছে। ১ শতাংশ লভ্যাংশে এ টাকা (পদ্মা সেতুর টোল) ফেরত দেবে সরকারকে, যাতে ভবিষ্যতে আমরা এভাবে প্রকল্প করতে পারি।’

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথি আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

সেতুর মান ও নিরাপত্তা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘বিশ্বের একটি উচ্চ মানের সেতু হয়েছে পদ্মা সেতু। পদ্মা সেতুর গল্প শুনে এখন আমাজনে সেতু বানাতে আগ্রহ দেখায় বিদেশিরা। যদি ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়, তখন যদি পিলারের নিচ থেকে ৬০-৬২ ফুট মাটি সরে যায়, তখন যদি পুরো সেতু রেলে ও যানবাহনে ওভারলোড থাকে এবং তখন ৫ হাজার মেট্রিক টনের একটা জাহাজ এসে পিলারে ধাক্কা দেয়, তখনো পদ্মা সেতুর কিছুই হবে না।’

আগামী মাসের শেষ সপ্তাহেই পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে উল্লেখ করে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। তিনি এখন দিনক্ষণ ঠিক করবেন।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা পালন করতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলনে, ‘জনসাধারণকে বাস্তবতা বোঝাতে হবে। এক দিনের তেল দিয়ে দুদিন রান্না করতে হবে। এক দিনের গ্যাস দিয়ে, লাকড়ি দিয়ে দুদিন রান্না করতে হবে। আমি শুধু ক্রেডিট বোঝাব মানুষকে, আসল সমস্যা বোঝাব না, তাহলে তো হবে না। তাহলে তো মানুষ বিপদে পড়বে।’

বাংলাদেশে উগ্রবাদ সম্পর্কে আইজিপি বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে, এ দেশের জনগণের সঙ্গে উগ্রবাদের কোনো সম্পর্ক নেই। উগ্রবাদ একটি বিজাতি সংস্কৃতি। দেশটাকে ধ্বংসের চক্রে ফেলার জন্য বাংলা ভাইদের মতো জঙ্গিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ দমন করেছি। নির্মূল করার জন্য কাজ করছি। এসব দমন করেই বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে চলছে।’

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথি র‍্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বিপিএম (বার), পিপিএম। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ

অনুষ্ঠানে শরীয়তপুর জেলাসহ বৃহত্তর ফরিদপুরের মোট ৫ জেলার পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসক, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, গণমাধ্যমকর্মী, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।