পুলিশি হেফাজতে আটক ৯ জেলে।

বরিশালের হিজলা উপজেলায় মা ইলিশ রক্ষার অভিযানে বের হওয়া মৎস্য অধিদপ্তর ও পুলিশের ছয়টি নৌযানে হামলা চালিয়েছেন অসাধু জেলেরা। এতে হিজলা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে শটগানের দুটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন। খবর জাগো নিউজের।

এ হামলার ঘটনায় ৯ জেলেকে আটক করা হয়েছে। তা ছাড়া জেলেদের হামলায় গুরুতর আহত এক পুলিশ সদস্যকে হিজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার গৌরবদী ইউনিয়নের খালিশপুর এলাকাসংলগ্ন মেঘনা নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় হিজলা উপজেলার চর মেমানিয়া এলাকার আব্দুর রহিম, আলমগীর সরদার, নিজাম হাওলাদার, জাকির হোসেন, ইসমাইল সরদার, পশ্চিম ডাইয়া এলাকার শাহাব উদ্দিন, চরহিজলা এলাকার মো. নোমান, বিপ্লবসহ ৯ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এ ছাড়া তাঁদের মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত ট্রলার এবং তিন হাজার মিটার জাল জব্দ করা হয়েছে।

হিজলার সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এম এম পারভেজ বলেন, মা ইলিশ রক্ষার নিষেধাজ্ঞা কার্যকরে মৎস্য অধিদপ্তর ও থানা-পুলিশ সদস্যরা ভোররাতে তিনটি স্পিডবোট এবং তিনটি ট্রলার নিয়ে মেঘনা নদীতে অভিযানে বের হন। পর্যায়ক্রমে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালানো হয়। ভোরে গৌরবদী ইউনিয়নের খালিশপুর এলাকাসংলগ্ন মেঘনা নদীতে পৌঁছলে একটি ট্রলারে ৯ জেলেকে মাছ শিকার করতে দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, তাঁদেরকে আটকের চেষ্টা করলে মৎস্য অধিদপ্তর ও পুলিশের নৌযানে হামলা চালানো হয়। তাঁরা বাঁশ দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। এরপর আরও ৫-৬টি ট্রলার এগিয়ে আসে। ওই সব ট্রলার থেকে ইটপাটকেল ও বাঁশের খণ্ড নিক্ষেপ করেন অসাধু জেলেরা। জেলেদের হামলায় তিনিসহ হিজলা থানার এসআই, পুলিশ কনস্টেবলসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে শটগানের দুটি গুলি ছোড়েন। পরে একটি ট্রলারে থাকা ৯ জেলেকে আটক করা হয়। হামলাকারী অন্য জেলেরা ট্রলার নিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

এ বিষয়ে হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইউনুস মিয়া বলেন, মেঘনা নদীতে পাঁচ-ছয়টি ট্রলার নিয়ে জেলেরা মৎস্য অধিদপ্তরের ও পুলিশের নৌযান ঘিরে ফেলেন। অসাধু জেলেরা নৌযানগুলো ডুবিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি ওই সব ট্রলার থেকে হামলা চালানো হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে শটগানের দুটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন।

তিনি বলেন, জেলেদের হামলায় থানার এসআই বেল্লাল হোসেন, ফরিদ, কনস্টেবল মাহফুজুর রহমানসহ ১০-১২ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে গুরুতর আহত কনস্টেবল মাহফুজুরকে হিজলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অন্যরাও চিকিৎসা নিয়েছেন।

ওসি ইউনুস মিয়া আরও বলেন, আটক ৯ জেলের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। তা ছাড়া হামলায় অংশ নেওয়া অন্যদের পরিচয় শনাক্ত করে আটকের চেষ্টা চলছে। ওই এলাকায় আরও জোরদার অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।