প্রেস ব্রিফিংয়ে শিশু সিফাত হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বলছেন বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

বগুড়ায় সিফাত নামে ১৩ বছরের এক শিশুকে নৃশংসভাবে হত্যার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এর রহস্য উন্মোচন ও হত্যাকাণ্ডে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী আজ বুধবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। এ সময় জেলা পুলিশের অন্যান্য সিনিয়র কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ সুপার জানান, ২৬ ডিসেম্বর (সোমবার) বেলা দেড়টার সময় বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানাধীন বুড়িগঞ্জ ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের একটি বাঁশবাগানে সিফাতের লাশ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সুপারের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুর রশীদের তত্ত্বাবধানে ডিবি বগুড়ার ইনচার্জ মো. সাইহান ওলিউল্লাহর নেতৃত্বে ডিবি পুলিশের একটি টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২৭ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) বিভিন্ন সময়ে বগুড়া জেলার সদর, শিবগঞ্জ থানাসহ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। একপর্যায়ে ঢাকার মণিপুরীপাড়া এলাকা থেকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ১৩ বছর বয়সী এক শিশুকে আটক করে।
তার কাছ থেকে একটি রক্তমাখা ধারালো চাপাতি (যা হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়েছে), ১টি নেভি ব্লু রঙের রক্তমাখা জ্যাকেট ও ১টি স্যামসাং অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার শিশু জানায়, সে কৌশলে সিফাতের কাছ থেকে একটি ফ্রি ফায়ার গেমের আইডি ও পাসওয়ার্ড নিয়ে নেয়। এতে সিফাত বারবার তার গেমের আইডি ফেরত চাইলে সে তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এতে সিফাত ও তার কয়েকজন বন্ধু মিলে তাকে চাপ দিলে আইডি ও পাসওয়ার্ড ফেরত দিতে বাধ্য হয় এবং তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য গ্রেপ্তার শিশু এক পরিকল্পনা করে।

সিফাত হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার শিশুর কাছ থেকে উদ্ধার করা চাপাতি, মোবাইল ফোন ও জ্যাকেট। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

গত ২৫ ডিসেম্বর আনুমানিক বিকেল ৪টার সময় সিফাত তার বড় বোনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন মেরামত করার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হলে পথে গ্রেপ্তার শিশুর সাথে দেখা হয়। সে কৌশলে সিফাতকে তার দাদার বাড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে শিবগঞ্জ থানাধীন নিশ্চিন্তপুর এলাকার একটি বাঁশবাগানের মধ্যে নিয়ে সিফাতের গলায় ধারালো চাপাতি দিয়ে আঘাত করে। এতে মাটিতে পড়ে গেলে সে কুপিয়ে তাকে জখম করে এবং শেষে মুখ চেপে ধরে জবাই করে ও বাম হাতের কবজির রগ কেটে দেয়। হত্যা শেষে সে আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে ঢাকা চলে যায়।