আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র চ্যাপ্টারের দেওয়া সংবর্ধনা শেষে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: বাসস

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের দেওয়া ব্যাপক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে মাতৃভূমিতে বিনিয়োগের জন্য প্রবাসী বাংলাদেশি আমেরিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আপনারা বাংলাদেশি প্রবাসীরা মার্কিন নাগরিকদের পাশাপাশি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন।’ খবর বাসসের।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় ২৪ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) রাতে লাগার্ডিয়া বিমানবন্দরের ম্যারিয়ট হোটেলে আওয়ামী লীগের যুক্তরাষ্ট্র চ্যাপ্টারের দেওয়া এক নাগরিক সংবর্ধনা শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলো তাঁকে এই সংবর্ধনা দেয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে বলেন, তাঁর সরকার দেশের এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন উদ্দীপনা প্যাকেজ ও অন্যান্য সুবিধা দিচ্ছে। সারা দেশে প্রায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হচ্ছে। প্রবাসী বাংলাদেশি এবং আমেরিকানরা এর থেকে লাভবান হতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারেন এবং প্রবাসীরা এতে আরও সুবিধা পাবেন।

সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাহসী ভূমিকার ফলাফল সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে সব কথা না বললে সমস্যার সমাধান হবে না।’খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারি ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁর সরকার খাদ্য উৎপাদনে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছে।

দেশে ও বিদেশে শত্রু তৈরি এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার ঝুঁকি নেওয়া-সম্পর্কিত আরেকটি প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কিছু লোককে বঞ্চিত মানুষের জন্য ঝুঁকি নিতে হয়। আমি যখন ন্যায়বিচার এবং সমতা চাই, তখন এটি নিয়ে চিন্তা করে কোনো লাভ হয় না।’

এর আগে নিউইয়র্ক আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনগুলোর দেওয়া ভার্চ্যুয়াল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, তারা মূলত ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে। তারা দেশের জনগণের শত্রু।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে অবস্থানরত কিছু লোক (সরকারের) সমালোচনা এবং দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে ব্যস্ত। এমন সময়ে তারা এসব করছে, যখন আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে গেছে। কেউই যাতে দেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে না পারে, সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

ওয়াশিংটনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬তম অধিবেশন ও উচ্চপর্যায়ের পার্শ্ব-আলোচনায় যোগদান শেষে তাঁর সপ্তাহব্যাপী সরকারি সফর সমাপ্ত করে ২৫ সেপ্টেম্বর (শনিবার) সকালে ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ভিভিআইপি চার্টার্ড ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে নিউইয়র্ক থেকে রওনা হয়ে স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩ মিনিটে ওয়াশিংটনে পৌঁছায়। তিনি জানান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিমানটি স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শহিদুল ইসলাম ওয়াশিংটন ডিসির ডালাস আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।