গুস্তাভো পেত্রো ও ফ্রান্সা মার্কেজ। ছবি: রয়টার্স।

কলম্বিয়ার বোগোটা শহরের সাবেক মেয়র এবং সাবেক গেরিলা নেতা গুস্তাভো পেত্রো দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার দ্বিতীয় দফার ভোটেও জয় পেয়েছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে কলম্বিয়ায় প্রথমবারের মতো কোনো বামপন্থী নেতা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন। তাঁর রানিংমেট ফ্রান্সা মার্কেজ হচ্ছেন প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট। খবর বিবিসির।

গত ২৯ মে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে গুস্তাভো পেত্রো জয়ী হলেও কোনো প্রার্থীই প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোট নিশ্চিত করতে না পারায় গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় দফার নির্বাচন। এ নির্বাচনে পেত্রোর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ৭৭ বছর বয়সী ব্যবসায়ী রদোলফো এরনান্দেজ।

দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ৫০ দশমিক ৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন পেত্রো। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী এরনান্দেজের চেয়ে সাত লাখের বেশি ভোট পেয়েছেন তিনি।

এ জয়কে ‘ঈশ্বর ও জনগণের জয়’ বলে উল্লেখ করেছেন পেত্রো। টুইটারে তিনি লিখেছেন, মাতৃভূমির হৃদয়ে আজ যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে, তা দিয়ে সকল ভোগান্তি ধুয়ে যাক।

ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে পেত্রোর রানিংমেট ছিলেন ফ্রান্সা মার্কেজ। কলম্বিয়ার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন তিনি।

একসময় এম-১৯ গেরিলার সদস্য ছিলেন পেত্রো। কয়েক দশক আগে এ বিদ্রোহী গোষ্ঠী বিলুপ্ত হয়ে যায়। নির্বাচনী প্রচারণায় অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন পেত্রো। বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিনা মূল্যে পড়াশোনার ব্যবস্থা, পেনশন ব্যবস্থায় সংস্কার আনা এবং অনুৎপাদনশীল জমির ওপর উচ্চ কর আরোপ করবেন। ২০১৬ সালে যে চুক্তির কারণে কমিউনিস্ট গেরিলা গোষ্ঠী ফার্কের সঙ্গে সরকারের ৫০ বছরের দীর্ঘ সংঘাতের অবসান হয়েছিল, তা বাস্তবায়নেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

গুস্তাভো পেত্রোর সমালোচকেরা বলেছিলেন, তিনি যে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, তা দেশকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিতে পারে।

তবে শেষ পর্যন্ত পেত্রোর দারিদ্র্য দূর করার প্রতিশ্রুতি অত্যন্ত অসাম্যের দেশটির জনগণকে টানতে পেরেছে। বাস্তুচ্যুত আফ্রো-কলম্বিয়ান নারী ইফোর আনা বিয়াত্রিজ আচেভেদো মনে করেন, এ নির্বাচন দেশের জন্য বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসবে। সূত্র: প্রথম আলো।