ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার সকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)। ছবি : ডিএমপি নিউজ

রাজধানীতে জাল টাকা তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগ (ডিবি)। অভিযানে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা, জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামসহ চক্রের মূল হোতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খবর ডিএমপি নিউজের।

মোহাম্মদপুর থানার চাঁদ উদ্যান হাউজিং এলাকায় বুধবার (২৭ জুলাই) রাত ৮টা ৩০ মিনিটের দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের বিমানবন্দর জোনাল টিম।

গ্রেপ্তার আসামির নাম মো. হুমায়ন কবির। গ্রেপ্তারের সময় তার কাছ থেকে ১৬ লাখ জাল টাকা, জাল টাকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত ১টি ল্যাপটপ, ১টি প্রিন্টার, ১টি লেমিনেটিং মেশিন, ১ কৌটা পেস্টিং গাম, তিনটি টাকা তৈরির ডাইস, ২ বান্ডেল ফয়েল পেপার, ২ প্যাকেট টাকা তৈরির কাগজ, ১টি কাটার ও ২টি মোবাইল জব্দ করা হয়।

ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) সকালে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য বিস্তারিত তুলে ধরেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বিপিএম (বার), পিপিএম (বার)।

ডিবির প্রধান বলেন, ঢাকা শহরে ডিবির বিভিন্ন টিম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে মোহাম্মদপুর থানার চাঁদ উদ্যান হাউজিং এলাকার ৪ নম্বর রোডের ১১ নম্বর বাসার একটি ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা, জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ চক্রের মূল হোতা হুমায়ন কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। হুমায়নের নেতৃত্বেই মূলত চক্রটি এই বিপুল পরিমাণ জাল টাকা তৈরি করে। গত রমজানের ঈদের আগেও লালবাগে জাল নোট তৈরির কারখানা থেকে অনেক জাল নোট এবং মেশিনপত্র জব্দ করেছিল ডিবি লালবাগ বিভাগ।

তিনি বলেন, অনেক দিন থেকেই তারা এই কাজ করে আসছে। প্রতি মাসে ৬০ লাখ জাল টাকা তারা তৈরি করে। সারা দেশে ৪/৫টা নিয়ন্ত্রণ গ্রুপের মাধ্যমে এই নকল টাকা তারা ছড়িয়ে থাকে। প্রতি এক লাখ নকল টাকায় কারখানার মালিক পায় ১০ হাজার টাকা।

মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, তারা মূলত ঈদকে টার্গেট করে এই জাল টাকা তৈরি করে থাকে। তবে আমরা দেখতে পাচ্ছি, আসন্ন পূজাকে কেন্দ্র করে মাসে ৬০ লাখ টাকা রোলিং করার টার্গেটে এখন থেকেই তারা কাজ শুরু করেছে।

জব্দ করা জাল টাকা ও তৈরির সরঞ্জাম। ছবি : ডিএমপি নিউজ

অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, গ্রেপ্তার হুমায়ন তার ভাড়া বাসাকে জাল টাকা তৈরির কারখানা হিসেবে ব্যবহার করত। ঈদ বা পূজার সময় ব্যাংকে যখন অত্যধিক ভিড় হয়, সেই ভিড়ের মধ্যে তারা ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তার মাধ্যমে জাল টাকার একটা বড় অংশ জমা করত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। ঢাকার কোথাও এ ধরনের জাল টাকা তৈরির কারখানা আর আছে কি না, সেটা আমরা তদন্ত করছি। এই চক্রের অন্যান্য সদস্যকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হুমায়নের বিরুদ্ধে জাল টাকা তৈরির চারটি মামলা রয়েছে। এবার মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হওয়ায় আরও একটি মামলা যুক্ত হলো।