ময়মনসিংহ পুলিশ হাসপাতালে পুলিশ সদস্যদের জন্য ডায়াগনস্টিক টেস্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়েছে।

বুধবার সকালে ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য এ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। খবর আমাদের সময়ের।

পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞার সভাপতিত্বে ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাল্গুনী নন্দীর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বলেন, এখন থেকে পুলিশ সদস্য, তাঁদের পরিবার ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যদের পরিবারের সদস্যরা এই হাসপাতালে চিকিৎসাসংক্রান্ত বিষয়ে কম মূল্যে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারবেন।

ময়মনসিংহ জেলায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরা যাতে সহজ ও কম মূল্যে চিকিৎসা নিতে পারেন, এ জন্য আধুনিক সুবিধাসংবলিত জেলা হাসপাতাল নির্মাণ করেছে সরকার। তিনি আরও বলেন, এই হাসপাতালে সকল চিকিৎসা নির্ণয় নিশ্চিত করতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য এক বছর আগে উন্নত ও আধুনিক মানের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুধু লোকবলের অভাবে এসব যন্ত্রপাতি চালু এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না।

বর্তমান পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা এসব যন্ত্রপাতি চালু এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সেবা চালু করতে উদ্যোগ নেন। এ জন্য ১৪ জন পুলিশ সদস্যকে ময়মনসিংহে বেসরকারি হাসপাতাল পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত করে তোলেন। হাসপাতালে দায়িত্বরত ডাক্তার, স্বাস্থ্য সহকারী এবং প্রশিক্ষিত এসব পুলিশ সদস্য নিয়মিত চিকিৎসাসংক্রান্ত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অল্প সময়ের মধ্যে রিপোর্ট দিতে সক্ষম হবেন। এতে কর্মরত পুলিশ ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসাসংক্রান্ত সমস্যা অনেকটা সমাধান হবে।

প্রশিক্ষিত পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, রোগী বা চিকিৎসা নিতে আসা লোকজন যাতে বিড়ম্বনায় না পড়েন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মানুষ যেন চিকিৎসা নিতে এসে হাসিমুখে ফিরে যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি আরও বলেন, আপনারা আন্তরিক হয়ে দরদ দিয়ে কাজ করবেন।

তিনি বলেন, নারীরা বেশি আন্তরিক হয়। এ জন্য আরও বেশিসংখ্যক নারী পুলিশকে চিকিৎসাক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত করে এই হাসপাতালে কাজে লাগান। তাহলে এই হাসপাতাল পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে।

রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরও বলেন, করোনাকালে রাজারবাগ হাসপাতাল ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে। আশা করছি ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ হাসপাতাল ধীরে ধীরে এগিয়ে যাবে। এ রেঞ্জের সকল পুলিশ সদস্যের চিকিৎসায় দায়িত্ব পালন করে সফলতা নিয়ে আসবে। এ ছাড়া সকল পুলিশ সদস্য যাতে সহজ ও কম মূল্যে চিকিৎসা সেবা পায়, এ জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সাথে পুলিশ বাহিনীর যৌথ চুক্তির বিষয়ে পুলিশ সুপার এবং পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম কাজলের প্রতি আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা বলেন, পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য সরকার সকল সুযোগ সুবিধাসংবলিত আধুনিক মানের হাসপাতাল করে দিয়েছে। হাসপাতালে রোগীদের রোগ নির্ণয়ে আধুনিক ও উন্নত মানের যন্ত্রপাতি দিয়েছেন। শুধু লোকবলের অভাবে চালু করা সম্ভব হয়নি।

এ জন্য হাসপাতালে কর্মরতদের বাইরে ১৪ জন পুলিশ সদস্যকে প্রশিক্ষিত করে তোলা হয়েছে। প্রশিক্ষণে সহযোগিতার জন্য পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, চমৎকারভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে তারা বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকে সহযোগিতা করেছে। আমরা কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে এই সেবা অব্যাহত রাখার দাবি করেন। এবং আরও অধিকসংখ্যক লোকজনকে প্রশিক্ষিত করে এটি একটি উন্নত মানের হাসপাতাল গড়ে তোলার ব্যাপারে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত ডিআইজি আবিদা সুলতানা, পুলিশ হাসপাতালের চিকিৎসক সুমিত রায়হান, মাইমুনা মাহমুদ ও ফারজানা ফেরদৌসসহ রেঞ্জ ও জেলা পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পরে ডিআইজি ফিতা কেটে পুলিশ হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক সেন্টার উদ্বোধন করেন এবং রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি ও বিভিন্ন রুম পরিদর্শন ও কার্যকর পদক্ষেপ সম্পর্কে নানা বিষয় পরিদর্শন করেছেন।

ময়মনসিংহ পুলিশ হাসপাতালের সার্বিক দায়িত্বে রয়েছেন পুলিশ পরিদর্শক শাহানুর ইসলাম এবং সব সময় হাসপাতাল মনিটরিং করবেন অতিরিক্ত ডিআইজি আবিদা সুলতানা। এই হাসপাতালে সুগার,লিপিড প্রোফাইল, ইউরিন, টি জি,প্রেগনেন্সি, কোলেস্টেরল, ইসিজিসহ ২৭টি রোগ নির্ণয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।