আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি-সংগৃহীত

কেউ নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে তার পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ার করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নির্বাচনে আসার মতো বিএনপির আত্মবিশ্বাস নেই। তাই তারা নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করছে।

বৃহস্পতিবার সকালে জেলা আওয়ামী লীগের তেজগাঁও কার্যালয়ে দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সংগ্রাম করে গেছে। আর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মী জীবন দিয়েছে। আওয়ামী লীগের শক্তি দেশের জনগণ। জনগণের জন্য কাজ করে আস্থা তৈরি করেছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার এবং ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ আবারও সেই অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছে। ক্ষমতা দখলকারীরা উর্দি খুলে হঠাৎ রাজনীতিবিদ হয়ে যায়। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেই সংবিধান স্থগিত করে মার্শাল ল জারি করে। হ্যাঁ-না ভোটের না বাক্স খুঁজেই পাওয়া যায়নি। তারা জনগণের জন্য কিছু করেনি।

তিনি বলেন, আজ আন্তর্জাতিকভাবে অনেকে দেশ নিয়ে কথা বললেও যখন মিলিটারি ডিটেক্টররা মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ণ করেছিল, তখন তাদের চেতনা কোথায় ছিল? কিছু দেশ আছে আমাদের দেশে গণতন্ত্র নিয়ে কথা বলে অথচ তাদের দেশের কী অবস্থা, সেটা দেখলেই বোঝা যায়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ভোট চুরির অপরাধে খালেদা জিয়াকে ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ পদত্যাগ করতে হয়েছে। সেটা সবারই জানা।

শেখ হাসিনা বলেন, একসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ছিল নির্বাচন কমিশন। এখন নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করতে আওয়ামী লীগ সরকার আইন করে দিয়েছে, যার অধীনে এখন দেশে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়। ৮২টি সংশোধনী এনে অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযোগী আইন করে দিয়েছে সরকার।

একমাত্র আওয়ামী লীগই দেশের মানুষের জন্য কাজ করে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগের ঘোষিত ইশতেহার অনুযায়ী প্রতিবছর বাজেট প্রণয়ন এবং প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এখন আওয়ামী লীগের লক্ষ্য দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করে স্মার্ট সরকার এবং স্মার্ট সোসাইটি গঠন করা। সেটা করে যাচ্ছি আমরা।

বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০১৪ সালে আত্মবিশ্বাস ছিল না বলেই জ্বালাও-পোড়াও করে তারা নির্বাচনে আসেনি। ২০১৮ সালের নির্বাচন নিয়ে অপবাদ দিলেও কেউ এখন পর্যন্ত অনিয়মের একটি সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দেখাতে পারেনি।

গণতন্ত্রের নামে বিএনপি জনগণকে ধোঁকা দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ চায় দেশে গণতন্ত্র থাকুক এবং রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনভাবে কাজ করুন। তবে বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে আওয়ামী লীগ সেই রাজনীতি করার সুযোগ পায়নি। তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে সারা দেশে দলের একুশ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। বিএনপি এখন তাদের রাজনীতি, মিছিল-মিটিং করলেও আওয়ামী লীগ সেখানে বাধা দেয়নি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মিছিল-মিটিং এবং সুস্থ রাজনীতি করায় বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছিল, তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করছিল, মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছিল। কিন্তু যখন তারা আবার সহিংসতার সেই পুরোনো রূপে ফিরে গেল, তখন তারা আবার জনগণের কাছে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই সংগঠনটি জনগণের কাছে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। তাদের বোঝা উচিত, মানুষের জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করে এবং মানুষকে হত্যা করে সরকারে যাওয়া যায় না।

বিদেশিদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জন্য কাজ করেছি। আমাদের গণতন্ত্র আছে। আমাদের দেশে কোনো দেশের তাঁবেদারি চলবে না। তিনি বলেন, অতীতের মতো মনোনয়নের ব্যবসা করতে হলেও বিএনপি নির্বাচনে আসুক। তখন দেখা যাবে কার কত দম। সেটাও দেখতে চায় আওয়ামী লীগ।

সরকারপ্রধান বলেন, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, সেই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। দেশবাসীকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগের আহ্বান জানান তিনি। সূত্র: ঢাকা টাইমস।