পুলিশের হেফাজতে গ্রেপ্তার ১২ জন ডাকাতের পাঁচজন। ছবি: বাংলাদেশ পুলিশ।

নওগাঁয় সম্প্রতি চালবোঝাই ট্রাক ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ১২ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে সদর মডেল থানার পুলিশ। তারা ডাকাতি হওয়া ২৩১ বস্তা চাল উদ্ধার এবং চাল বিক্রির ২ লাখ ১৬ হাজার ৪৫০ টাকা জব্দ করেছে।

গত ২২ মার্চ রাত দেড়টার দিকে নওগাঁ সদর থানার নওগাঁ-বগুড়া বাইপাস মহাসড়কের ইকরতারা নামক স্থানে গাছের গুঁড়ি ফেলে ৭/৮ জন ডাকাত চালক ও হেলপারকে বেঁধে রেখে চালের বস্তাবোঝাই একটি ট্রাক ডাকাতি করে।

ট্রাকটি ৪০০ বস্তা আতপ চাল নিয়ে গাইবান্ধা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাচ্ছিল। নওগাঁ সদরের বাইপাস সড়কের ইকরতারা নামক স্থানে ট্রাকটি পৌঁছালে ডাকাত দল রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে উট্রাকটি থামিয়ে চালক এবং হেলপারকে ট্রাক থেকে নামিয়ে মাঠের মধ্যে হাত পা বেঁধে রাখে। এরপর দুইজন ডাকাত ট্রাকটি নিয়ে চলে যায়। প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা পর বাকি ডাকাতরা চালক এবং হেলপারকে সেখানে ফেলে রেখে চলে যায়। ভোরে চালক ও হেলপার কৌশলে তাদের হাতের বাঁধন খুলে পাশের লোকালয়ে গিয়ে বিষয়টি জানালে পুলিশকে জানায়।

এ ঘটনায় নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হলে সাথে সাথেই নওগাঁ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাশিদুল হকের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. গাজিউর রহমানের নেতৃত্বে সদর থানা পুলিশ ডাকাতদের শনাক্ত করার কার্যক্রম শুরু করে।

একপর্যায়ে বগুড়া জেলার শেরপুর থানার রানির হাট নামক স্থানে পরিত্যক্ত অবস্থায় ট্রাকটি উদ্ধার করা হয়। এরপর প্রযুক্তি এবং সোর্সকে কাজে লাগিয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে, ডাকাতি করা চাল শেরপুর থানার একটি গোডাউনে আনলোড করা হয়েছে। সেখানে অভিযান চালিয়ে চালের ক্রেতা আব্দুল মজিদ ও সোহানুর রহমান সোহাগকে গ্রেপ্তার করে। তাদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সোহাগের বাড়ী থেকে ৯০ বস্তা চাল এবং বগুড়া সদরের নিশিন্দারা হতে ২০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়।

এরপর গত ২৯ মার্চ কাহালু থানা এলাকা থেকে শাজির উদ্দীন মন্ডল ওরফে মিলনকে গ্রেপ্তার করে তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে কাহালু এবং বগুড়া সদরের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১১১ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়।

একই দিন ডাকাত জিয়াকে কাহালু থানা এলাকা থেকে এবং ডাকাত শাজাহান ওরফে লালন, মেহেদী এবং ইউসুফকে জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর ও নওগাঁ জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়। ডাকাত মেহেদী হাসান ও ইউসুফ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এরপর ৩০ মার্চ রাতে বগুড়া সদরে অভিযান চালিয়ে ডাকাত মাহফুজ, রাজু পালোয়ান এবং রতনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার রাজু পালোয়ানকে নিয়ে সিরাজগঞ্জ জেলার হাটিকুমরুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির চাল কেনা-বেচার সাথে জড়িত শরিফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তার কাছ থেকে চাল বিক্রির ২ লাখ ১৬ হাজার ৪৫০ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ১৫/১৬ জনের আন্তজেলা ডাকাত দলটি ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে ৮ জনের ১টি দল সরাসরি ডাকাতি করে। অন্য দলটি বিভিন্ন জায়গায় চাল পরিবহন ও বিক্রি করে।