ফরিদপুরের সাজেদা কবিরউদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটারদের লাইন। ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। দেশের ২৯৯টি আসনে সকাল আটটায় শুরু হয় ভোট উৎসব। বিরতিহীন ভোট গ্রহণ চলবে বিকাল চারটা পর্যন্ত। প্রায় ১২ কোটি ভোটার নিজেদের রায়ে বেছে নেবেন নিজে নিজ এলাকার জনপ্রতিনিধিদের। খবর একাত্তর ডটটিভির।

নওগাঁ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আমিনুল ইসলাম মারা যাওয়ায় ওই আসনের নির্বাচন স্থগিত করেছে ইসি। ফলে ৩০০ আসনের মধ্যে ২৯৯ আসনে ভোট হবে।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এবারই প্রথমবারের মতো ভোটের দিন সকালে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে। শুধু দুর্গম অঞ্চলের দুই হাজার ৯৬৪টি কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হয়েছে ভোটের আগের দিন।

সারাদেশে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য স্থাপনায় মোট ৪২ হাজার ২৪টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে ভোটকক্ষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি।

ভোটের নিরাপত্তা রক্ষায় মাঠ পর্যায়ে পুলিশ, র‍্যাব, আনসার-ভিডিপি, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৮ লাখ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ঢাকায় শুক্রবার মধ্যরাত থেকে মোটরসাইকেল এবং শনিবার মধ্যরাত থেকে আরো কিছু যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পুলিশ।

এছাড়া ভোট গ্রহণের কাজে ৮ লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত থাকবেন। এছাড়াও স্ট্যান্ডবাই থাকবেন এক লাখ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তিন হাজার ম্যাজিস্ট্রেট ও বিচারক মাঠে থাকছেন। তারা যে কোনো অপরাধে তাৎক্ষণিক শাস্তি দিতে পারবেন।

এবার ভোটে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে ৬৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে দুইজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন জেলা প্রশাসক।

শনিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল দেশবাসীকে নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আহবান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, কোনো অনিয়ম হলে প্রয়োজনে ভোট বন্ধ করা হবে।

১৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ১৮ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয় সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। ওই দিন থেকেই আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হয়। প্রচার শেষ হয় ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টায়।

এবারের নির্বাচনে ১৮ দিন প্রচারের সময় পেয়েছেন প্রার্থীরা। এবারের নির্বাচনে ২৮টি দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ১৯৭০ প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। তাদের মধ্যে দলীয় প্রার্থী ১৫৩৪ জন আর স্বতন্ত্র ৪৩৬ জন।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী ২৬৬ জন, জাতীয় পার্টির ২৬৫, তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী ১৩৫ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ৬৬ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ১২২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ১৩ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের ১০ জন প্রার্থী রয়েছেন। নির্বাচনে নারী প্রার্থী হিসেবে রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯০ জন। আর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অন্যান্য মিলে ৭৯ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

২৯৯ সংসদীয় আসনে মোট ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ৪২ হাজার ২৪টি। এসব কেন্দ্রে ভোটকক্ষ দুই লাখ ৬১ হাজার ৯১২টি। মোট ভোটার ১১ কোটি ৯৬ লাখ ৮৯ হাজার ২৮৯ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ৬ কোটি ৭৬ লাখ ৯ হাজার ৭৪১ ও নারী ভোটারের সংখ্যা ৫ কোটি ৮৯ লাখ ১৮ হাজার ৬৯৯। এছাড়া দেশে এবার তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ৮৪৯ জন।